Last updated on May 9th, 2023 at 01:08 pm
কাঠ বাদামের উপকারিতা প্রসঙ্গে কিছুটা হলেও আমাদের ধারণা রয়েছে। তবে, বাস্তবতা হল, কাঠ বাদাম এর উপকারিতা আমাদের ধারণার চেয়েও অনেক বেশি। তার কারণ, প্রাকৃতিকভাবে এর মধ্যে উপস্থিত রয়েছে অসাধারণ কিছু পুষ্টি উপাদান।
এই পোষ্টে কাঠ বাদামের উপকারিতা, কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম এবং কাঠবাদাম এর সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়ের উপর তথ্য উপস্থাপনের চেষ্টা করব।
চলুন, শুরু করি।
Table of Contents
কাঠ বাদামের উপকারিতা
কাঠ বাদামের উপকারিতা আলোচনার সাথে এটি সম্পর্কে আনুসঙ্গিক কিছু তথ্য জেনে রাখা ভাল। চলুন প্রথমে সেগুলো নিয়ে কথা বলি। যেমন, কাঠ বাদাম গাছ সম্পর্কে সংকিষপ্ত পরিচিতি, বাদামটির পুষ্টিগুন কেমন, উপকারিতা, এর কোন ক্ষতিকর দিক আছে কিনা এবং সবশেষে কাঠ বাদামের দাম।
আর একটি এখানে আমি মাঝে মাঝে কাঠবাদামের ইংরেজি এলমন্ড কথাটিও সমার্থক শব্দ হিসাবে ব্যবহার করব।
কাঠ বাদাম গাছ: এটি কি ধরণের বাদাম?
কাঠবাদাম বা এলমন্ড হচ্ছে এক প্রকার ফল যা কাঠবাদাম গাছ থেকে উৎপাদিত হয়। গাছটি বৈজ্ঞানিক নাম Prunus dulcis. বৃক্ষটি ইরানে স্থানীয়ভাবে চাষ হতে দেখা যায়। পরে তা মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ থেকে শুরু করে ভূমধ্যসাগরিয় অঞ্চলে এর বিস্তার লাভা করে।
বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বিশ্বের মোট উৎপাদনের প্রায় অর্ধেক উৎপাদিত হয়।
ইংরেজিতে এই বাদামকে almond বলা হয়। এটি গতানুগতিক অন্যান্য বাদামের মত নয়। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই কাঠ বাদাম গাছ চাষ করা যায়।
গাছটির ফলের ভিতর থেকে যে বীজ সংগ্রহ করা হয় তাই হল এই বাদাম। বীজটি এক প্রকারের শক্ত আবরণ দিয়ে আবৃত থাকে। ফল পেকে যাওয়ার পর আবরণটি সরিয়ে ফেলে বীজ থেকে পৃথক করা হয়।
কাঠ বাদাম গাছের ছবি
নিচে কাঠ বাদামের ছবি দেওয়া হল যেখানে গাছের ভিতর কিভাবে কাঠ বাদাম ফল প্রকৃতিগত ভাবে তৈরি হয়, তা বুঝা যাবে।
কাঠ বাদামের পুষ্টি গুন
এই ধরণের বাদাম উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার। তবে এর চর্বি হল মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। এই ধরণের চর্বি ভাল কোলেস্টেরলের পরিমান বৃদ্ধির মাধ্যমে হার্টের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়তা করে। এই বাদামে প্রোটিন এবং ফাইবার বেশি থাকে। এছাড়া, এরা প্রয়োজনিয় ভিটামিন ও খনিজ লবনের খুব ভাল এক উৎস।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ USDA, এর তথ্য মতে, প্রতি ১ আউন্স (২৮ গ্রাম) কাঠ বাদামে নিচের পুষ্টি উপাদানসমুহ পাওয়া যায়-
- ক্যালরি: ১৬৪
- চর্বি: ১৪.২ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট: ৬.১ গ্রাম
- ফাইবার: ৩.৫ গ্রাম
- সুগার: ১.২ গ্রাম
- প্রোটিন: ৬ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট:
খাদ্যের ফাইবার এর খুব ভাল এক উৎসের নাম কাঠ বাদাম। অন্যান্য বাদামের তুলনায় এর glycemic index কম। যারা কম কার্বোহাইড্রেট বিশিষ্ট খাবার খোজ করেন, এটি তাদের জন্য একটি সুযোগ হতে পারে।
চর্বি: এটি যেহেতু চর্বি সমৃদ্ধ খাবার তাই প্রতি এক আউন্স পরিমান এটি খেলে আপনার চর্বি জাতীয় খাদ্যের দৈনিক চাহিদার প্রায় ২২% পূরণ হয়ে যাবে। এছাড়াও, এই বাদামের অধিকাংশ চর্বি মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট হওয়ায় এটি হৃদরোগ ও হাই কোলেস্টেরলের জন্য খুব উপকারি।
প্রোটিন: উদ্ভিদজাত প্রোটিনের একটি অনন্য উৎস এই বাদাম। যেখানে আপনি স্বল্প মাত্রা হলেও সব ধরণে প্রয়োজনিয় এমাইনো এসিড পাবেন।
মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টস: এর অর্থ হল ক্ষুদ্র আকারে পুষ্টি। আপনি জেনে অবাক হবেন, প্রতি আউন্স কাঠবাদাম খেলে আপনার ভিটামিন-ই এর দৈনিক চাহিদার প্রায় ৩৭% পুরণ হবে, ক্যালসিয়াম চাহিদার ৮% ও আয়রন চাহিদার ৬% পূরণ হবে। ভিটামিন-ই এন্টি অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে এবং এর আরোও অনেক উপকারিতা আছে। আবার, ক্যালসিয়াম আমাদের দেহের হাঁড় ও দাত গঠনে ও মজবুত রাখতে কাজ করে এবং আয়রন লোহিত রক্ত কনিকা তৈরিতে অপরিহার্য এক উপদান।
কাঠ বাদামের উপকারিতা
এই বাদাম সারা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খাবার। পুষ্টিগুনে ভরপূর হওয়ার ফলে কাঠ বাদামের উপকারিতা অনেক। নিচে এর কয়েকটি উপকারিতা উল্লেখ করা হল-
১) এন্টি অক্সিডেন্ট হিসাবে কাঠবাদাম
প্রাকৃতিকভাবে কাঠবাদাম এন্টি অক্সিডেন্টের খুব ভাল এক উৎস যেখানে প্রচুর পরিমান এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে। আর এই এন্টি অক্সিডেন্ট দেহকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে। এই অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ক্যানসারসহ অনেক জটিল রোগের কারণ হয়। কাঠবাদামের বাদামি রঙের আবরণে এন্টি অক্সিডেন্ট এর পরিমান বেশি থাকে। কাজেই, এটি খাওয়ার সময় লক্ষ রাখতে হবে যাতে এর আবরণ ফেলে দেওয়া না হয়।
৬০ জন ধুমপায়ি পুরষ মানুষের উপর পরিচালিত একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অংশ হিসাবে জনপ্রতি দৈনিক ৩ আউন্স বা ৮৪ গ্রাম কাঠবাদাম চার সপ্তাহ ধরে খাওয়ানো হয়। এরপর, তাদের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ২৩-৩৪% কমে যায়।
২) ভিটামিন-ই এর উৎস হিসাবে কাঠবাদাম
কাঠবাদাম ভিটামিন-ই এর সবচেয়ে ভাল উৎস যা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। শুধু ১ আউন্স পরিমান এই বাদাম খেলে আপনার দৈনিক ভিটামিন-ই চাহিদার প্রায় ৩৭% পূরণ হয়ে যাবে।
ভিটামিন-ই যা চর্বিতে দ্রবনীয়। ফলে এই বাদাম চর্বি সমৃদ্ধ হওয়ায় এর ভিটামিন-ই খুব সহজেই শরীরে ব্যবহৃত হতে পারে। আমরা জানি, ভিটামিন-ই এন্টি অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে যা দেহের বিপাকীয় কার্যক্রমের ফলে উৎপাদিত ফ্রি রেডিক্যাল প্রশমনে অসামান্য ভূমিকা রাখে।
এই ফ্রি রেডিক্যাল প্রশমিত না করা গেলে এর আমাদের দেহে ক্যানসারসহ অনেক জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করে। বিভিন্ন গবেষণায় কাঠ বাদাম খাওয়ার খেলে হৃদরোগ, ক্যানসার ও Alzheimer’s disease ইত্যাদি রোগে আক্রান্তের হার কমে যায় বলে জানা গিয়েছে।
৩) রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রনে কাঠবাদাম
এই বাদামে কার্বোহাইড্রেটের পরিমান কম কিন্তু চর্বি, প্রোটিন ও ফাইবার বেশী থাকে। যা ডায়াবেটিস রোগীর পছন্দের খাবার তালিকায় অধিক উপযোগী হয়।
এছাড়া, এখানে মেগনেসিয়াম পরিমানও বেশি যা রক্তে সুগারের পরিমান কমাতে কাজ করে। আমাদের শরীরে দৈনিক ম্যাগনেসিয়ামের প্রয়োজন ৩১০-৪২০ গ্রাম। আপনি ২ আউন্স পরিমান এই বাদাম খেলে ম্যাগনেসিয়ামের দৈনিক অর্ধেক পরিমান চাহিদা মিটে যাবে।
গবেষণা থেকে জানা যায়, ২৫-৩৮% টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর দেহে ম্যাগনেসিয়ামের স্বল্পতা রয়েছে। মেগনেসিয়ামের এই অভাব পূরণ করা গেলে রক্তে গ্লুকোজ লেভেল তাৎপর্যপূর্ণভাবে কমে যাবে এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতাও বাড়িয়ে দিবে।
ইহা থেকে পরিস্কার হয়, অধিক ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন কাঠবাদাম আপনার টাইপ-২ ডায়াবেটিসে নিয়ন্ত্রণে ভাল ভূমিকা রাখতে পারে।
৪) দেহে কোলেস্টেরল কমানোর কাজে কাঠবাদাম
কাঠ বাদামের উপকারিতা প্রসঙ্গে কোলেস্টেরলের উপর এর যথেষ্ট ভূমিকা আছে। দুই ধরণের কোলেস্টেরলের মধ্যে এলডিএল কোলেস্টেরল খারাপ কোলেস্টেরল হিসাবে চিহ্নিত যা হৃদরোগের ঝুঁকি তৈরি করে। কাঠবাদাম রক্তের এই খারাপ কোলেস্টেরল দমিয়ে রাখতে ফলপ্রসুভাবে ভূমিকা পালন করে।
ষোল সপ্তাহ মেয়াদে ৬৫ জন প্রি-ডায়াবেটিস বিশিষ্ট মানুষের মাঝ পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, খাদ্যের ২০% ক্যালরি কাঠ বাদাম থেকে সরবরাহ করার ফলে LDL কোলেস্টেরলের মাত্রা গড়ে ১২.৪ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার পরিমান কমে যায়। অপর এক গবেষণায়, দৈনিক ৪২ গ্রাম কাঠ বাদাম খাওয়ার ফলে ৫.৩ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার পরিমান LDL কোলেস্টেরল কমে যেতে দেখা যায়। কিন্তু একই সাথে ইহা ভাল কোলেস্টেরল অর্থাৎ HDL কোলেস্টেরল কমানোর কাজে কোন প্রভাব ফেলে না।
৫) ক্ষুধা কমানোর ক্ষেত্রে কাঠবাদাম
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, এই বাদামে কার্বোহাইড্রেট কম এবং প্রোটিন ও ফাইবার বেশি থাকে। এই প্রোটিন ও ফাইবারের কাজ হল পাকস্থলিতে ক্ষুধার অনুভূতি দমিয়ে রাখা। ফলে ক্ষুধা কম লাগায় খাওয়ার পরিমান কমে যায়। এতে আপনার ক্যালরি গ্রহনের পরিমান কমে যাবে।
কাঠ বাদাম খাওয়ার ফলে ক্ষুধা কম লাগার বিষয়টি অনেক গবেষনায় প্রমান পাওয়া গিয়েছে।
৬) ওজন কমানোর কাজে কাঠবাদাম
বাদামের মধ্যে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান থাকে যা দেহের পক্ষে ভেঙ্গে হজম করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। ফলে বাদামের ১০-১৫% ক্যালরি দেহে শোষণ হতে পারে না। এছাড়াও, কিছু তথ্য থেকে জানা যায়, বাদাম খেলে শরীরের কোষের ভিতর বিপাকিয় প্রক্রিয় ধীর গতিতে হয়।
কাঠ বাদামের এই সব বৈশিষ্ট কারণে এটি ওজন কমানোর উপায় হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এর প্রমান বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়।
আমাদের দৈহিক ওজন কেন বাড়ে– তার উপর অন্য একটি পোষ্টে আলোচনা করা হয়েছে। বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করে ভিজিট করুন।
কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম
কাঠ বাদামের উপকারিতা ইতোমধ্যে জেনেছেন। এবার চলুন, কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম জেনে নেই। এই বাদাম আপনি কাচাও খেতে পারেন আবার পানিতে ভিজিয়ে রেখেও খেতে পারেন। তবে, পানিতে ভিজিয়ে খেলে এটি অধিক উপকারিতা পাওয়া যায় বলে পুষ্টিবিদগনের ধারণা। কেননা, সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখার ফলে এর কিছু এনজাইম সক্রিয়তা লাভ করে যা হজমের জন্য সহায়ক।
তবে, সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ বিষয় হল, নির্ধারিত মাত্রায় খেতে হবে। কারণ, এই বাদাম অত্যাধিক পুষ্টি সমৃদ্ধ ও এর মধ্যে ক্যালরির পরিমান অনেক বেশি থাকে।
দৈনিক কয়টি কাঠ বাদাম খাওয়া উচিত?
মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের গবেষণা মতে আপনি দৈনিক এক আউন্স পরিমান এই বাদাম ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন যা সংখ্যায় ২০-২৩টি হতে পারে।
বন্ধুগন- কাঠ বাদামের উপকারিতা বিষয়ে পোষ্টের তথ্যগুলো কেমন লাগল তা কমেন্টের মাধ্যমে জানানোর অনুরোধ করছি। ধন্যবাদ।
কাঠ বাদামের ক্ষতিকর দিক
কাঠ বাদামের উপকারিতা অনেক যা আমরা উপরে বর্ণিত তথ্য থেকে জানতে পেলাম। এর উপকারি দিক জেনে কিছু কিছু সৌখিন মানুষ নিজের বাগানেও এটি চাষ করা শুরু করেছেন।
কিন্তু আপনি কি জানেন, কাঠ বাদামের অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক বলেও কথা রয়েছে? হ্যা, যদি আপনি কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম মেনে না চলেন, তাহলে আপনিও কাঠ বাদামের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার স্বীকার হতে পারেন।
কাজেই, কাঠবাদাম হাতে পেলেই খাওয়া শুরু না করে প্রথম এর উপকারিতার সাথে সাশে ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানুন। দৈনিকের পরিমিত মাত্রার চেয়ে কতটুকু বেশী খেলে আপনি সমস্যায় পরতে পারেন বিষয়গুলি প্রত্যেকেরই জানা প্রয়োজন।
আমি নিচে কাঠ বাদামের সাতটি ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আলোকপাত করছি-
১) অতিরিক্ত কাঠ বাদামের ফলে কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। আমরা জানি এলমন্ড হচ্ছে একটি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার নি:সন্দেহে স্বাস্থ্যসম্মত হিসাবে পরিগনিত। কিন্তু পরিমানে বেশী হয়ে গেলেই এই সমস্য দেখা দিতে পরে।
২) অতিরিক্ত এলমন্ড খেলে পরিপাক তন্ত্র থেকে খাদ্য সার মানে পুষ্টির শোষণ কমে যাবে। কাঠবাদামে উস্থিত ফাইবার খাদ্যের খণিজ লবন যেমন ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রণ, জিংক ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান দেহে শোষণ হতে বাধা প্রদান করে। কাজেই, মনে রাখুন, আপনি দৈনিক ৩০ গ্রাম পর্যন্ত এটি খেতে পারেন।
৩) এলমন্ড কোন কোন মানুষের দেহে এলার্জি তৈরি করতে পারে। কেননা এতে রয়েছে amadin নামের একটি প্রোটিন উপাদান যা এর জন্য দায়ী। কাঠবাদামের কারণে দেহে যেসব এলার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে তাদের উদাহারণ যেমন জিহ্বা ফুলে যাওয়া, গলা, ঠোট ও মুখমন্ডল ফুলে যাওয়া এবং সেখানে এক ধরণের চুলকানির অনুভুতি।
তবে, কোন কোন মানুষের বেলায় মারত্মক প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়। যাকে বলা হয় anaphylaxis. এটি হলে বমি, শ্বাস কষ্ট, রক্ত চাপ কমে যাওয়া ইত্যাদির মত কঠিন অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
তাই, আপনি আগে কখনোও না খেয়ে থাকলে প্রথমে দু’ তিন টুকরো খেয়ে দেখে নিন আপনাকে স্যুট করছে কিনা। অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অগ্রসর হউন।
৪) অতিরিক্ত পরিমানে খেলে কিডনি তে পাথর হতে পারে। কাঠবাদামে oxalate নামের একটি যৌগ থাকে যা দেহের অন্ত্রে দ্রবীভূত হয়। তবে, এই যৌগটির পরিমান বেড়ে গেলে তা কিডনিতে পাথর তৈরির পথ সুগম করে দিতে পারে। কাজেই, সতর্কতার সাথে পথ চলা উচিত।
৫) অতিরিক্ত কাঠবাদাম খেলে দেহে ভিটামিন ই এর পরিমান বেড়ে যাবে। কারণ, এলমন্ডে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ই প্রকৃতিগত ভাবে উপস্থিত থাকে। তাই, আপনি যদি ইতোমধ্যে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ অন্যান্য খাবার বা ভিটামিন ই সাপ্লিমেন্ট খেয়ে থাকেন, তাহলে এলমন্ড খাওয়ার বেলায় সাবধানতা অবলম্বন করুন।
অতিরিক্ত ভিটামিন ই রক্ত জমাট বাধার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে। ফলে দেহে রক্তক্ষরণ দেখা দিতে পারে।
কাঠ বাদাম খেলে কি ওজন বাড়ে
প্রশ্নটি অনেকে করে থাকে। আপনি কি জানেন, ১ আউন্স বা প্রায় ৩০ গ্রাম কাঠবাদামে কি পরিমান ক্যালরি থাকে? তা প্রায় ১৬৪ ক্যালরি। শুনে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এটি বাস্তবতা।
কাজেই, এটি খুব হাই ক্যালোরি খাবার।
এবারে আসুন, আসল কথায়।
দৈহিক ওজন বাড়ার সহজ ধারণা এটি বলে যে, আপনার চাহিদা অনুযায়ি প্রতিদিন যে পরিমান ক্যালরি খাদ্যের সাথে গ্রহণ করা উচিত তার চেয়ে অধিক পরিমান ক্যালরি গ্রহন করা উচিত নয়। অন্যথায় দেহের ওজন বৃদ্ধিতে এটি অবদান রাখবে।
এজন্য, দৈহিক ওজন নিয়ন্ত্রণ করার স্বার্থে প্রতিটি মানুষের তার দৈহিক অবস্থা অনুযায়ি ক্যালরি হিসাব করে খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।
কাঠ বাদামের দাম
আলোচ্য পোষ্টে কাঠবাদামের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানার পর কাঠ বাদামের দাম কত – প্রশ্নটি উঠতেই পারে। তবে, এতটুকু বলছি কাঠ বাদাম এর দাম আপনার সাধ্যের ভিতরেই আছে।
আমাদের দেশে এটি মুলত: একটি আমদানি নির্ভর খাদ্য পণ্য। আর যে সব পণ্য আমদানি নির্ভর সেগুলো বৈদেশিক মুদ্রার উঠানামার সাথে দেশীয় বাজারে তাদের দাম উঠানামা করতে দেখা যায়।
যদি ধারণা দেওয়ার জন্য বলি তাহলে এক কেজি কাঠ বাদামের দাম ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। এটি খুচরা বাজারের কথা বললাম।
আপনি যদি কাঠবাদামের আজকের বাজার দর সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এখানে ভিজিট করুন।
Reference:
- Leech, J. (2021). 9 Evidence-Based Health Benefits of Almonds. Retrieved 28 March 2021, from https://www.healthline.com/nutrition/9-proven-benefits-of-almonds#TOC_TITLE_HDR_2
good post,khuboii upkari Post
কোনটা সঠিক তথ্য?কেউ বলে ৫/৬ টা আবার আপনি বলেন ২০/২৩ টা