Last updated on May 9th, 2023 at 05:30 pm

কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার এর উপর কিছু তথ্য নিয়ে আজ চলে এলাম আপনাদের মাঝে।

মানবদেহের অত্যন্ত গুরত্বপূর্ন একটি অঙ্গের নাম কিডনি। এটি দেখতে লালচে-বাদামি বর্ণের শীম বীজ এর ন্যায় এক জোড়া অঙ্গ যা মেরুদন্ডি প্রাণিতে থাকে। এটি চার থেকে পাঁচ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।

কিডনি আপনার দেহকে সুস্থ রাখার জন্য যে কাজটি প্রধানত: করে তা হলো এক প্রকার ছাকনি বা ফিল্টারিং এর কাজ। যার ফলে আপনার শরীরের যাবতীয় রক্ত পরিশুদ্ধ লাভ করে। রক্ত থেকে সব বিষাক্ত পদার্থ আলাদা করে ফেলে। পরে তা মুত্র হয়ে দেহ থেকে অপসারণ হয়।

যাহোক, অদ্যকার পোষ্টে আমি মুলত: কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার নিয়ে কথা বলব। সাথে থাকবে কিছু আনুসঙ্গিক বিষয়।

তো চলুন, মুল আলোচনা শুরু করি।

তবে, মুল আলোচনায় যাওয়ার পূর্বে কিডনি রোগ বলতে কি বুঝায় এবং এটি মানবদেহে কি কাজগুলো করে থাকে – এ নিয়ে কিছু প্রাথমিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। যাতে পরের বিষয়গুলি বুঝতে সুবিধা হয়।

কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

কিডনি রোগ কি?

কিডনি রোগ কি – এর সহজ উত্তর হচ্ছে আপনার কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যাওয়া। এর ফলে এটি তার স্বাভাবিক কাজকর্ম যেভাবে করার কথা সেভাবে করতে পারে না।

আপনি যদি ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে আপনার কিডনি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।

কিডনি রোগ সাধারণত: ক্রোনিক বা দীর্ঘ সময় ধরে ধীরে ধীরে তৈরি হয়। এজন্য বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এটিকে ক্রোনিক কিডনি রোগ হিসাবে ধরে নেওয়া হয়। আর এই ক্রোনিক কিডনি রোগে কারণ মুলত: দু’টি যা পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে। একটি উচ্চ রক্তচাপ এবং অপরটি ডায়াবেটিস।

এই রোগ দেখা দিলে এটি থেকে সম্পূর্ণরুপে আরোগ্য লাভ করা যায় না। তবে, আপনি স্বাস্থ্য বিধি মেনে এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন যতদুর পারা যায়।

কিডনি ক্ষতি হতে হতে যখন এর প্রায় ৭৫% নষ্ট হয়ে যায়, তখন এ অবস্থাকে বলা হয় কিডনি ফেইলিউর। এক্ষেত্রে চিকিৎসা হিসাবে হয় আপনাকে কিডনি ট্র্যান্সপ্লেন্ট করিয়ে নিতে হবে অথবা এর বিকল্প হিসাবে নিয়মিতভাবে আপনাকে ডায়ালাইসিস করাতে হবে।

কিডনি রোগ কি – বিষয়ে কথা বলার শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছিল কিডনি ধীরে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যাওয়া যার ফলে এক পর্যায়ে এটি তার কাংখিত কাজ সম্পাদানে ব্যর্থ হয়।

এখন প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক, মানব দেহে কিডনির কাজ কি –বিষয়টি নিয়ে এখন কথা বলব। কিডনির কাজের উপর কিছু ধারণা হয়ে গেলে কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার বিষয়টি আরোও সহজে বুঝা যাবে।

মানবদেহে কিডনির কাজ কি?

শুরুতেই বলা হয়েছে কিডিনি মানব দেহের খুব গুরত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। দেহের তরল পদার্থ ও খনিজ লবন এর সুষম ভারসাম্য বজায় রাখতে এটি ভূমিকা পালন করে। এছাড়া, দেহের বর্জ্য পদার্থ অপসারণেও রয়েছে এর বিশেষ দায়িত্ব।

নিচে এক এক করে কিডনির প্রধান কয়েকটি কাজ উল্লেখ করছি-

১) বর্জ্য নিষ্কাশন:

বিভিন্ন রকমের বর্জ্য পদার্থ দেহ থেকে মুত্রের মাধ্যমে অপসারণ করে। প্রধান প্রধান কয়েকটি বর্জে্যর নামের উদাহারণ-

  • ইউরিয় যা আমিষ বা প্রোটিন ভাঙ্গনের ফলে তৈরি হয়।
  • ইউরিক এসিড যা দেহের নিউক্লিয়িক এসিড ভেঙ্গে উৎপাদিত হয়।
  • বিভিন্ন ঔষধ সামগ্রী এবং তাদের বিপাকীয় বর্জ্য।

২) পুষ্টির পুনঃশোষণ কাজে

রক্তে মিশ্রিত পুষ্টির পুনরায় দেহের ভিতর শোষণ কাজে কিডনি কাজ করে। কিডনি টিবিউলস রক্তে উপস্থিত পুষ্টি শোষণ করে শরীরের সঠিক জায়গায় পৌছে দেয় যেখানে সেটি কাজে লাগতে পারে। যেসব পুষ্টি পুনরায় শোষণ হয় তাদের নাম-

  • গ্লুকোজ
  • এমানো এসিড
  • পানি
  • ফসফেট
  • ক্লোরাইড, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাসিয়াম আয়ন

৩) পিএইচ নিয়ন্ত্রণে

মানবদেহে গ্রহনযোগ পিএইচ লেভেল ৭.৩৫-৭.৪৫ পর্যন্ত। এই রেঞ্জেরে কম বেশী হল আপনার দেহ হয় এসিডিক অথবা ক্ষারীয় রুপ ধারণ করবে। এর ফলে, প্রোটিন ও এনজাইম ভেঙ্গে গিয়ে তাদের স্বাভাবিক কাজ করতে পারে না। কোন কোন ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।

আপনার কিডনি ও ফুসফুস দেহের স্বাভাবিক পিএইচ লেভেল ধরে রাখতে কাজ করে। রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ফুসফুস তার কাজটি করে।

অপরদিকে, কিডনি বাই কার্বোনেট তৈরি করে পুনরায় দেহে শোষণের মাধ্যমের পিএইচ নিয়ন্ত্রণের কাজটি সমাধা করে। যা কিনা এসিডকে প্রশমিত করতে কাজ করে।

যখন রক্তে পিএইচ সহনীয় মাত্রায় থাকে তখন কিডনি এই বাই কার্বোনেট জমা রাখতে পারে। কিন্তু, রক্তে যদি পিএইচ কমে যায় অর্থাৎ এসিডিক অবস্থা তৈরি হলে তাকে প্রশমনের লক্ষ্যে কিডনি তখন এই বাইকার্বোনেট রিলিজ করে।

৪) অসমোলারিটি নিয়ন্ত্রণে

কথাটির অর্থ হলো দেহের খনিজ লবন ও পানির একটি ভারসাম্য বজায় রাখা। যা কিনা শরীরে বিদ্যমান তরল পদার্থ এবং খনিজ লবনের একটি অনুপাত।

এই ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার একটি প্রাথমিক কারণ হিসাবে ডিহাইড্রেশন বা পানি শুন্যতার নাম উদাহারণ হিসাবে বলা হয়।

দেহের রক্ত রসে এদের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হলে তা থেকে পরিত্রানের লক্ষ্যে মস্তিষ্ক থেকে একটি বার্তা প্রেরণ করা হয় যার ফলে কিডনি নিচের কাজগুলি সম্পাদন করা শুরু করে।

  • মুত্রের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে
  • পানি পুনঃশোষন বাড়িয়ে দেয়
  • পানি পুনরায় দেহে ফেরত পাঠিয়ে দেয়
  • ইউরিয় ছেড়ে না দিয়ে তাকে কিডনির ভিতর ধরে রাখে। কারণ, ইউরিয়া এমন একটি পদার্থ যার ধর্ম পানি টেনে নেওয়া।

৫) রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে

প্রয়োজন অনুযায়ী কিডনি দেহের রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে তবে তা পরোক্ষভাবে।

৬) কিছু সক্রিয় পদার্থ নিঃসরণ করে

কিডনি যে সব একটিভ কম্পাউন্ড নি:সৃত করে তারা হচ্ছে –

  • ইরাইথ্রোপয়েটিন: কিডনির সাথে সাথে লিভার থেকেও এটি তৈরি হতে পারে। এর কাজ লোহিত রক্ত কণিকা (আরবিসি) তৈরিতে কাজ করে।
  • রেনিন: রক্ত নালীর সংকোচন-প্রসারণ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কাজ করে এবং রক্ত রস, লসিকা ও আন্ত্রিক রসের পরিমান নিয়ন্ত্রণেও এটি কাজ করে।
  • ক্যালসিট্রিওল: এটি ভিটামিন ডি এর একটি সক্রিয় উপাদান। এটি অন্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে।

কিডনি রোগ কেন হয়?

ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপকেই কিডনি রোগের অন্যতম সেরা কারণ হিসাবে ধরা হয়। এক্ষেত্রে যে কিডনি রোগটি বিবেচ্য তা হচ্ছে ক্রনিক কিডনি রোগ।

যদি আপনার কিডনি তিন মাসেরও অধিক সময় ধরে সুষ্ঠরুপে কার্য সম্পাদান করতে পারে না তখন চিকিৎসাবিদ এটি ক্রনিক হিসাবে বিবেচনা করে।

মনে রাখতে হবে, এই ক্রনিক রোগের লক্ষণ আপনার নিকট নাও ধরা পরতে পারে। কিন্তু, এমন অবস্থায় যদি রোগটিকে সনাক্ত করে চিকিৎসা শুরু করতে পারেন, তাহলে আরোগ্য লাভ কিছুটা সহজ হবে।

যাহোক, কিডনি রোগ কেন হয় তার প্রধান কয়েকটি কারণ নিচে উল্লেখ করছি-

১) ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিসের ফলে রক্তে গ্লুকোজের উপস্থিতি বেড়ে যায়। যা পর্যায়ক্রমে কিডনি ফিল্টার এর ক্ষতি সাধন করতে থাকে। এভাবে ক্ষতি হতে হতে এক পর্যায়ে আপনার কিডনি রক্ত থেকে অতিরিক্ত তরল পদার্থ ও বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য ফিল্টার করার কাজটি ভালভাবে সম্পন্ন করতে পারে না।

এজন্য, যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের কিডনি রোগের প্রথম লক্ষণ হিসাবে মুত্রে প্রোটিন এর উপস্থিতি ধরা পরে। কিডনি ফিল্টার নষ্ট হওয়ার জন্য এলবুমিন নামের প্রোটিন যা কিন দেহের জন্য উপকারি সেটি কিডনি ধরে রাখতে পারে না। ফলে, এই এই এলবুমিন কিডনি থেকে বের হয়ে মুত্রের মাধ্যমে দেহ থেকে অপসারণ হয়।

২) উচ্চ রক্ত চাপ

উচ্চ রক্ত চাপের কারণে কিডনির রক্ত নালী ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। ফলে, তখন কিডনি ভালভাবে কাজ করতে পারবে না। ফলে শরীরের বর্জ্য ও অতিরিক্ত ফ্লুইড দেহে থেকে অপসারণের কাজটি বাধাগ্রস্থ হবে। এ অবস্থায় রক্তের অতিরিক্ত ফ্লুইড বের হতে না পেরে তার কারণে রক্ত চাপ আরোও বেড়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে।

এছাড় কিডনি রোগ অন্যান্য যে সব কারণে হতে পারে তা নিম্ন রুপ-

  • জেনেটিক রোগের কারণে কিডনির ভিতর সিস্ট হলে যাকে পলিসিস্টিক কিডনি রোগ বলে।
  • দীর্ঘ মেয়াদী ভাইরাল ইনফেকশন হলে, যেমন- এইডস, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি ইত্যাদি।
  • অটো ইমিউন রোগ যেমন, lupus
  • মুত্র নালিতে কোন সমস্যা হলে, যেমন পাথর
  • কিডনির জন্য ক্ষতিকারক কোন ড্রাগস সেবন করলে
  • হেভি মেটাল যেমন লেড বিষক্রিয়া হলে
  • কিডনিতে প্রদাহ হলে

বন্ধুগন- কিডনি রোগ কেন হয় – আশা করি উপরের আলোচনা থেকে বুঝতে পেরেছেন। কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন।

এবারে, কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার শীর্ষক পোষ্টের মুল আলোচনায় চলে যাব। প্রথমে রোগটির লক্ষণ ও তারপর এর প্রতিকার।

কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার: লক্ষণ

অধিকাংশ লোকই প্রাথমিক অবস্থায় বুঝতে পারেনা তার কিডনি রোগ হয়েছে কিনা। দিন যত গড়াবে আস্তে আস্তে লক্ষণগুলো প্রকাশ পাওয়া শুরু হবে।

নিচে ধারাবাহিকভাবে কিডনি রোগের লক্ষণ তুলে ধরা হলো-

  • উচ্চ রক্ত চাপ
  • বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া
  • ক্ষুধামন্দা
  • অবসাদগ্রস্থতা
  • দুর্বলতা
  • ঘুমের সমস্যা
  • মাংসপেশীর সংকোচন যা প্রসারণ হতে পারেনা
  • পা ফুলে যাওয়া
  • শুস্ক ত্বক
  • বার বার প্রস্রাব হওয়া
  • দেহে পানি ধরা
  • রক্ত শূন্যতা

কিডনি রোগের প্রতিকার

উপরে রোগটি লক্ষণ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে। এবারে কিডনি রোগের প্রতিকার নিয়ে কথা বলব। ক্রনিক কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার শীর্ষ আলোচনার এ অংশে প্রতিকার সম্পর্কে বলতে গেলে এক কথায় বলব – এর ভাল প্রতিকার আশা করা যাবেনা।

কিন্তু আপনি কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারেন যা কিনা কিডনি ফাংশনের লেভেল বাড়ানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।

ক্রনিক কিডনি রোগের বেশ কিছু ধাপ বা পর্যায় থাকে। যদি প্রাথমিক পর্যায়ে রোগটি ধরতে পারেন, তাহলে এর প্রতিকার ব্যবস্থা ভাল।

তবে, শেষের পর্যায়ে যখন কিডনি ফাংশ খুব বেশী কমে যাবে তখন নিম্নোক্ত উপায়ে পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারেন।

  • নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
  • রক্তে সুগার এর মাত্রা ও রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
  • ব্যথানাশক ও অন্যান্য মেডিকেশন গ্রহনে বিরত থাকুন যা কিডনির কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়।
  • খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের জন্য একজন পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করুন।
  • ধুমপান পরিহার করুন।
  • রক্তশূণ্যতা হলে তার চিকিৎসা নিন।
  • নিয়মিত শরীর চর্চা বা হাটা-চলা করুন।
  • দেহের ওজন স্বাভাবিক কিনা যাচাই করুন।

কিডনি রোগ কি ভাল হয়?

হ্যা, কিডনি রোগ ভাল হয় যদি আপনি সময়মত রোগটি সনাক্ত করে চিকিৎসা ব্যবস্থা শুরু করতে পারেন। যেমন, ক্রনিক কিডনি রোগের কয়েকটি ধাপ রয়েছে যা কিডনি ফাংশনের উপর ভিত্তি করে নির্নয় করা হয়েছে।

আপনি যদি প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা শুরু করতে পারেন যখন কিডনি ফাংশন ৬০-৯০ এর মধ্যে থাকে তখন থেকে চিকিৎসা শুরু করলে ভাল হয়ে যাওয়ার আশা করতে পারেন।

কিডনি রোগের স্টেজ সমূহ

কিডনি রোগের পাঁচটি স্টেজ বা পর্যায় রয়েছে। আপনার কিডনি কতটা ভালভাবে তার কার্য সম্পাদন করতে পারে তার উপর ভিত্তি করে এই পর্যায়গুলো সঙ্গায়িত হয়েছে। কার্য সম্পাদনের মধ্যে মুলত: আপনার কিডনি বর্জ্য পদার্থ এবং অতিরিক্ত ফ্লুইড ফিল্টার করে দেহ থেকে অপসারণ করতে পারে কিনা তা বুঝানো হয়েছে।

এই পর্যায়গুলোর মধ্যে স্টেজ-১ হতে স্টেড-৫ পর্যন্ত ধরা হয়েছে। স্টেজ-১ বলতে খুব মৃদু আকারের ক্ষতি এবং স্টেজ-৫ বলতে কিডনি ফেইলিউর বুঝানো হয়।

এই স্টেজগুলো কিডনির কার্যকারিতা প্রকাশ করে যা কিডনির ভিতরস্থ গ্লোমেরুলার ফিল্ট্রেশন রেট এর সংখ্যার উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়েছে।

নিচে প্রতিটি স্টেজ এক এক করে উল্লেখ করছি-

  • স্টেজ-১: এখানে গ্লোমেরুলার ফিল্ট্রেশণ রেট বা জিএফআর ৯০ বা তার উপরে থাকে। এই সংখ্যার দ্বারা প্রতিয়মান হবে, আপনার কিডনি ভালভাবেই তার কাজ সমাধা করছে যদিও কিডনির ক্ষতির পরিমান অনেকটা কম।
  • স্টেজ-২: এই স্টেজ-এ জিএফআর এর পরিমান ৬০-৮৯ এর মধ্যে হয়। এক্ষেত্রেও কিডনি স্বাভাবিক কাজ করতে পারে তবে তার ক্ষতির পরিমান স্টেজ-১ এর চেয়ে বেশী।
  • স্টেজ-৩: জিএফআর হবে ৩০-৫৯ এর মধ্যে। এই পর্যায়ে কিডনি তার কাংখিত কাজ করতে ব্যর্থ হবে। যা সবচেয়ে কমন পর্যায় হিসাবে পাওয়া যায়। এই ধাপে আপনি লক্ষণসমূহ বুঝতে পারবেন।
  • স্টেজ-৪: জিএফআর ১৫-২৯ হবে। এখানে কিডনি ফাংশন লক্ষণীয়ভাবে কমে যাবে। যার অর্থ হলো আপনার কিডনিতে মধ্যম পর্যায় থেকে মারাত্মক পর্যায়ে ক্ষতি সাধন হয়েছে।
  • স্টেজ-৫: জিএফআর ১৫ এর কম। মানে হলো আপনার কিডনি ফেইল করার খুব কাছাকাছি পর্যায়ে চলে এসেছে। এর জন্য, আপনাকে হয় ডায়ালাইসিস বা কিডনি ট্র্যান্সপ্লেন্ট এর প্রয়োজন হবে।

বন্ধুগন, কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার শীর্ষক পোষ্টের শেষ পর্যায়ে চলে এলাম। উপস্থাপিত তথ্যগুলোর উপর কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে জানানোর অনুরোধ করছি।