Last updated on May 14th, 2023 at 05:37 am

আপনার নতুন কেনা কাপড়টি ধোয়ার পর ছোট হয়ে যাওয়া নিয়ে কি আপনি চিন্তিত। তাহলে, প্রথমেই চলুন জেনে নেওয়া যাক স্রিংকেজ কাকে বলে  এবং এর উপর প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য।

যে কোন টেক্সটাইল ফেব্রিকস এর ক্ষেত্রে নতুন কাপড় ধৌত করার পর সংকুচিত হয়ে যাওয়া খুবই সাধারণ একটি ঘটনা। স্বাভাবিক অর্থে স্রিংকেজ তখনই বলা হবে যখন কাপড়টি ধোয়ার পর এর দৈর্ঘ ছোট হয়ে যায়। তবে, এই ছোট হয়ে যাওয়ার একটি গ্রহণযোগ্য মাত্রা বা পরিমান রয়েছে।

বিশেষ করে, কটন কাপড় ধৌত করার পর অনেকেই এ ধরণের অভিজ্ঞতার স্বীকার হয়েছে।

যাহোক, আলোচ্য পোষ্টে স্রিংকেজ কাকে বলে,  কত প্রকার, কাপড়ে এটি কেন ঘটে এবং গার্মেন্টও ও টেক্সটাইল জগতে কাপড়ের স্রিংকেজ কিভাবে গননা করা হয় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

চলুন – চলে যাই মুল আলোচনায়।

স্রিংকেজ কাকে বলে?

কোন একটি কাপড়ের টুকরা বা পোশাক ধৌত করার পর এটি সংকুচিত হয়ে এর সাইজ তার আসল সাইজের তুলনায় ছোট হয়ে যায়। কাপড়ের প্রকৃত সাইজের তুলনায় ছোট বা খাটো হয়ে যাওয়ার এই পদ্ধতিকে স্রিংকেজ বলা হয়। টেক্সটাইল জগতে এটি খুব পরিচিত একটি নাম।

টেক্সটাইল ফেব্রিক দিয়ে পোশাক তৈরির সমাপ্ত পর্যায়ে যখন তরল পদার্থ বা তাপ দিয়ে কাপড়টিকে প্রক্রিয়াজাত করা হয় তখন স্রিংকেজের এই ঘটনা ঘটে। কাপড়ের স্রিংকেজ তার দৈর্ঘ বা প্রস্থ উভয় বরাবর হতে পারে।

পোশাক শিল্পে স্রিংকেজের নেতিবাচক প্রভাব থাকে। যদি আপনার তৈরি পোশাকটি বার বার ধৌত করার দ্বারা যখন মুল পোশাকের ২-৩% এর অধিক পরিমানে সংকুচিত হয়ে যাবে তখন এর ব্যবহার উপযোগীতা কমে যাবে।

এজন্য পোশাক তৈরির পূর্বে জেনে নেওয়া ভাল এই অর্থে যে কাপড়টি পূর্বে ধৌত করা হয়েছিল কিনা। যদি পূর্বে ধৌতকৃত কোন কাপড় চাই সেটি ওভেন বা নীট জাতীয় হোক না কেন, সেক্ষেত্রে এটি দিয়ে পোশাক তৈরির পর এর সংকোচন বা খেপে যাওয়ার মাত্রা সীমা অতিক্রম করবে না।

কাপড়ে স্রিংকেজ কেন হয়?

নিম্নলিখিত কারণে আপনার পরিধেয় কাপড় খেপে যেতে পারে-

  • উইভিং প্রক্রিয়ায় যখন কাপড় বোনা হয় তখন ইয়ার্নগুলোকে টেনে লম্বা করা হয়। এর ফলে ওভেন জাতীয় কাপড়ের বিদ্যমান  ইয়ার্নের মাঝে উচ্চ মাত্রার চাপ বা tension তৈরি হয় যা পানি বা তরল পদার্থের সংস্পর্শে এলে ইয়ার্ন সংকুচিত হয়ে তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ পায়।
  • কাপড় উৎপাদন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ে যেমন ডাইং, প্রিন্টিং, ফিনিশিং – এসব ক্ষেত্রে কাপড়কে টেনে মেশিনের সাথে ফিট করতে হয়। যার ফলে কাপড়ে বিদ্যমান ইয়ার্নের মাঝে চাপ সৃষ্টি হয়।

কাপড়ে সৃষ্ট এই চাপ লাঘবের সুযোগ তখনই তৈরি হয় যখন যখন এটি পানির সঙ্গ লাভ করে। আর তখন এটি সংকুচিত হয়ে ছোট হয়ে যায়।

কাজেই, উপরের আলোচনা থেকে সহজেই বোধগম্য হয়, কাপড়ে কেন স্রিংকেজ হয়।

এবারে চলুন, স্রিংকেজ কত প্রকার ও কি কি – তা নিয়ে কিছু কথা বলি।

স্রিংকেজ কত প্রকার কি কি

স্রিংকেজ কয়েক প্রকারের হতে পারে। নিচে সংক্ষিপ্তভাবে এর প্রকারভেদ তুলে ধরা হলো।

১. প্রসারণ বা রিল্যাক্সেশন: আগেই বলা হয়েছে যে, ওভেন ফেব্রিক তৈরির সময় তার ইয়ার্নসমুহকে টেনে লম্বা করতে গিয়ে পর্যাপ্ত চাপে ফেলতে হয়। ওয়ার্প এবং ওয়েফ্ট অর্থাৎ কাপড়ের দৈর্ঘ ও প্রস্থ উভয় দিক বরাবর যদিও দৈর্ঘ বরাবর চাপের পরিমান অনেকটা বেশী থাকে। এই চাপ পরবর্তিতে আরোও বৃদ্ধি পায় যখন কাপড়টিকে বাজারজাত করার উপযোগী হিসাবে তৈরির জন্য উৎপাদন প্রক্রিয়ার শেষ পর্যায়ের আরোও কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হয়। এর ফলে ফিনিশড কাপড়টি এমন এক অবস্থায় পতিত হয় যাকে ডাইমেনশনাল ইনস্টেবিলিটি বলা হয়।

তবে, ওয়েট প্রসেসিং এর সময় কাপড়ের চাপে থাকা ইয়ার্ন সংকোচনের মাধ্যমে এর স্ট্যাবিলিটি কিছুটা হলেও পুনরুদ্ধারের সুযোগ তৈরি হয়।  আর এই ধরণের স্রিংকেজ এর নাম হলো রিল্যাক্সেশন স্রিংকেজ।

২. Swelling

কোন কোন কাপড়ের ফাইবার পানি শোষণ ফলে ফুলে যেতে পারে আবার পানি বর্জনের ক্ষেত্রে শুকিয়ে যেতে পারে। ওভেন ফেব্রিকের বেলায় এর ইয়ার্নগুলো যদি ঢিলে-ঢালাভাবে একটি আর একটির সাথে বোনা হয় তখন এই অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।

৩. ফেল্টিং

কাপড়ে বিদ্যমান ফাইবার এর ফ্রিকশনাল ধর্মের কারণে এ ধরণের স্রিংকেজ তৈরি হতে পারে। উল কাপড়ের উপরিভাগে এই প্রকৃতির স্রিংকেজের ঘটনা অনেক সময় দেখা যায়।

৪. সংকোচন বা কন্ট্রাকশন

সাধারণত: সিনথেটিক ইয়ার্ন দিয়ে তৈরি কাপড়ে এই ধরণের স্রিংকেজ হয়ে থাকে যদি কাপড়টিকে ২১০ ডিগ্রীর অধিক তাপমাত্রায় রাখা হয়।

স্রিংকেজ কিভাবে পরিমাপ করা হয়?

স্রিংকেজ পরিমাপের নিয়ম জানতে  এই পেজটি ভিজিট করুন।