Last updated on April 13th, 2024 at 09:07 am
আমরা সকলেই কাপড় কিনি। কিন্তু ক’জন এমন আছে যারা এটি সম্পর্কে ভাল ধারণা রাখে ? ন্যুনতম যে কাপড়টি কেনা হলো- তার নাম, পরিচয় বা অন্য কিছু? তাই, বিভিন্ন কাপড়ের নাম নিয়ে আজকের পোষ্ট লেখা হলো।
কাপড় একটি নিত্য ব্যবহার্য অতি প্রয়োজনী পণ্য। মানুষের মৌলিক তিনটি চাহিদার একটি। পৃথিবীর প্রত্যেক মানুষের জন্য এটি অপরিহার্য। সবসময় ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু আমাদের অনেকেরই কাপড় সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে কাপড় কেনার সময় সমস্যায় পরতে হয়। সঠিকভাবে কাপড় না চেনার কারনে আপনি অনেকভাবে প্রতারিত হতে পারেন।
বিভিন্ন ধরনের কাপড়ের নাম, এর প্রকৃতি ও উৎস্য সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। ফলে কাপড়ের পিছনে ব্যয় করা আপনার মুল্যবান অর্থ নষ্ট হয়ে যায়। কারণ, কাপড় কেনার পর দরকার হয় এর ধরণ অনুযায়ী সঠিক ব্যবহার পদ্ধতি।
যেমন ধরুন, কাপড়ের ময়লা পরিস্কার করতে হলে কোন কাপড় কিভাবে ধৌত করতে হয়, কাপড়ভেদে কি ধরণের ডিটারজেন্ট বা কেমিক্যালস ব্যবহার করতে হয়; এর উপর সঠিক পদ্ধতি থাকে। যা অনুসরন করলে নি:সন্দেহে আপনার কষ্টার্জিত পয়সায় ক্রয়কৃত বিভিন্ন ধরনের কাপড় টেকসই হতে পারে ।
গার্মেন্টস পণ্যে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাপড়ের নামের অংশ হিসেবে শার্টের কাপড়ের নাম, শার্ট কত প্রকার, পাঞ্জাবির কাপড় এবং প্যান্টের কাপড় ইত্যাদি বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন পোষ্ট দেওয়া রয়েছে। যা লিংকে ক্লিক করে দেখে আসতে পারেন।
চলুন আর সময় না বাড়িয়ে চলে যাই বিভিন্ন কাপড়ের নাম বিষয়ে মুল আলোচনায়।
Table of Contents
বিভিন্ন কাপড়ের নাম
কাপড়ের বিভিন্ন প্রকারের উৎস আছে। টেক্সটাইল ফাইবারের উৎসভেদে কাপড় বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে, যেমন প্রাকৃতিক, কৃত্রিম এবং মিশ্র প্রকৃতির। প্রথমে চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রাকৃতিক উৎস হতে প্রাপ্ত বিভিন্ন কাপড়েরর নাম। প্রকৃতিগতভাবে কাপড় আমরা তিন প্রকারের উৎস থেকে পেয়ে থাকি। যেমন, উদ্ভিদ, প্রাণি এবং খনিজ লবন।
উদ্ভিদজাত বিভিন্ন কাপড়ের নাম
কটন :
বিশ্বের সবচেয়ে বেশী ব্যবহার্য এবং জনপ্রীয় কাপড় হচ্ছে কটন কাপড়। এই কটন কাপড়ে কৃত্রিম কোন উপাদান থাকেনা। ইহা তুলা গাছের বীজের চতুস্পার্শস্থ ফাইবার হতে তৈরি করা হয়। এই কটন ফাইবারগুলোকে প্রথমে স্পিন করে ইয়ার্ন বা সুতা বানানো হয়। তারপর এই সুতা বুননের মাধ্যমে কটন কাপড় বা সুতি কাপড় তৈরি হয়। এই কাপড় বছরের সব মৌসুমেই পরিধেয় আরামদায়ক কাপড় হিসাবে সমাদৃত।
লিনেন:
লিনেন কাপড় ফ্ল্যাক্স নামক উদ্ভিদ হতে তৈরি হয়। এই গাছ শুকানেরা পর কান্ড হতে গাছের বীজ আলাদা করা হয়। তারপর এই গাছের কান্ড হতেই ফাইবার তৈরি করা হয় যা দিয়ে বুননের মাধ্যমে এই লিনেন কাপড় তৈরি হয়। এই লিনেন কাপড় খুব হালকা এবং ঝর ঝরে হয়ে থাকে। ফলে বিশেষ করে গ্রীস্ম কালে পরিধানের সময় খুব আরামদায়ক অনুভব হয় ।
হেম্প, Hemp:
হেম্প ফাইবার এক ধরণের ভেষজ উদ্ভিদ হতে তৈরি হয় যা cannabis sativa প্রজাতি অন্তর্ভূক্ত। এই উদ্ভিদ কটন এবং লিনেন বৃক্ষ হতে উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় এই গাছ হতে অধিক পরিমানে ফাইবার উৎপন্ন হয়। ইহা বিশ্বের সবচেয়ে পরিবেশ বান্ধব কাপড়। এই ধরনের কাপড় বেশ শক্ত প্রকৃতির হয়।
পরিধানের পর কোন প্রকার এলার্জির সৃষ্টি হয়না। গরম আবহাওয়ায় হেম্প ফাইবার হতে উৎপাদিত কাপড় পরিধান করে সবচেয়ে বেশী আরাম অনুভব হয়।
পাট:
পাট থেকেও কাপড়ের ফাইবার উৎপাদন করা হয়। তবে এই ফাইবারগুলি মসৃন হয়না। এর ফলে, বিশেষ ব্যতিক্রম এই ফাইবার দিয়ে পরিধেয় বস্ত্র তৈরি করা হয়না। পাটের আঁশ দিয়ে সাধারনত: রশি বা দড়ি, ব্যাগ, কার্পেট ইত্যাদি তৈরি করা হয়।
রেয়ন:
এক কথায় রেয়ন হচ্ছে এক ধরনের কাপড় যা পরিশুদ্ধ সেলুলজ ফাইবার দিয়ে তৈরি করা হয়। প্রাথমিকভাবে রেয়ন ফাইবার Wood Pulp হতে প্রস্তুত করা হয়। পরে কিছু রাসায়নিক দ্রব্যাদির সংমিশ্রনে কৃত্রিমভাবে এই ফাইবার বানানো হয়। এজন্য রেয়ন ফাইবার হচ্ছে এক ধরনের Semi-synthetic ফাইবার।
রেয়ন কাপড়ের প্রধান বৈশিষ্ট হচ্ছে এগুলো আদ্রতা শোষক। রেয়ন ফাইবার অত্যন্ত পাতল হওয়ায় এর ভিতর দিয়ে সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারে। ফলে ইহা গরম আবহাওয়ায় আরামদায়ক কাপড় হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও রেয়ন ফাইবারের এই বৈশিষ্টের কারণে ইহা খেলোয়ার ও এথলেট্সদের পছন্দের কাপড়।
প্রাণিজাত কাপড়ের নাম
সিল্ক বা রেশমি কাপড়:
রেশমি কাপড় প্রাণিজ উৎস হতে তৈরি করা হয়। এই ধরনের কাপড়ের ফাইবার রেশম পোকা বা silk worm চাষের মাধ্যমে উৎপাদন করা হয়। রেশম পোকা চাষের সময় এরা তুঁত গাছের পাতা খেয়ে জীবন ধারন করে এবং জীবনচক্রের চারটি ধাপ অতিক্রমের পর রেশমগুটি তৈরি হয়।
এই রেশম গুটি থেকেই পরবর্তিতে রেশম কাপড়ের ফাইবার তৈরি হয়। বিশ্বের সমস্ত কাপড়েরর মধ্যে রেশমি কাপড় সবেচেয়ে ব্যয়বহুল কাপড়। এই কাপড় পরিধানে আরামদায়ক এবং টেকসই হয়।
উল কাপড়:
উল কাপড় একটি প্রানিজ উৎসের কাপড় যা সাধারনত: ছাগল বা ভেড়ার পশম হতে উৎপাদন করা হয়। এই ধরনের শীতকালে ব্যবহার করে ঠান্ডা থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়। পরিধেয় বস্ত্র ছাড়াও উলেন কাপড় গৃহ সজ্জায় যেমন কার্পেট, পর্দা, বালিশ কাভার এবং অন্যান্য শিল্প কর্মে ব্যবহৃত হয়।
খনিজ লবন দিয়ে তৈরি কাপড়ের নাম
এসবেসটস:
ইহা একধরনের অধাতব খনিজ পদার্থ যা থেকে এসবেসটস প্রকারের ফাইবার তৈরি করে কাপড় উৎপাদন হয়। তবে, এই ধরনের কাপড় সুরক্ষা সরঞ্জাম বা Protective Cloth হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
পরিশেষে আমাদের প্রত্যেকেরই কাপড় চেনার প্রয়োজনীয় তথ্য জানা দরকার। এর ফলে সঠিক কাপড় সঠিকভাবে কেনার পর টেকসেইভাবে ব্যবহার করা যাবে।
এবারে চলুন জেনে নেওয়া যাক, তৈরি পোশাকের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন কাপড়েরর নাম।
পোশাকে তৈরিতে ব্যবহৃত কাপড়ের নাম
পাঞ্জাবির কাপড়ের নাম
পাঞ্জাবি ও জুব্বা মুসলিম প্রধান দেশ সমূহে খুব প্রচলিত একটি পোশাকের নাম। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে এটি জাতীয় পোশাক হিসাবেও সমাদৃত। তবে, আমাদের দেশে মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছাত্রদের পরিধেয় পোশাক হচ্ছে জুব্বা। একই সাথে ধর্মীয় অনুভূতি প্রবন এমন মুসলমানও রয়েছে যারা মাদ্রাসা শিক্ষিত না হয়েও জুব্বা পরিধান করে থাকে।
তাই, এই পাক ভারত উপমহাদেশের মানুষের মাঝে পাঞ্জাবি বা জুব্বার ব্যবহার অনেক।
নিচে কয়েকটি পাঞ্জাবির কাপড়ের নাম উল্লেখ করছি-
১) টরে কাপড়: জুব্বার কাপড়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত কাপড়টির নাম টরে কাপড়। বাজারে বিভিন্ন প্রকারের টরে কাপড় রয়েছে। দেশীয় টরে থেকে শুরু করে, থাইল্যান্ড, চায়না ও জাপানি টরে বাংলাদেশে খুব প্রচলিত। তবে, জাপানি টরে সবচেয়ে টেকসই এবং দামি।
আপনি যদি সবসময় পরিধান করতে চান এমন কাপড় খুঁজেন তাহলে দেশীয় টরে কাপড় বেছে নিতে পারেন। এটি সহনীয় দামের ভেতর টেকসই একটি কাপড়।
২) কটন বা সুতি কাপড়: এই ধরণের কাপড় দিয়ে পাঞ্জাবি তৈরির প্রচলনও অনেক ব্যাপক। তবে, জুব্বা বা পাঞ্জাবির সুতি কাপড় নামে বিশেষ ধরণের সুঁতি কাপড় বাজারে পেয়ে যাবেন। যা বিভিন্ন ডিজাইন দিয়ে তৈরি করা।
জুব্বা তৈরির কাজে যে সুতি কাপড় আছে তার দামও নাগালের ভিতর। তবে, এটি টরে কাপড়ের মত টেকসই হবে না।
৩) পলিস্টার, ইত্যাদি।
I pay a quick visit day-to-day a few web pages and websites to read
content, except this blog offers feature based
writing.