প্যান্ট কত প্রকার ও কি কি – বিষয়টি জানা থাকলে বাজারে হরেক রকম প্যান্টের মধ্যে আপনার পছন্দেরটি খুব সহজেই বাছাই করে নিতে পারেন। বহু সময় ধরে প্যান্টের প্রচলন দেখা যায়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্টাইল, বিভিন্ন রং, বিভিন্ন রকম ডিজাইন, বিভিন্ন ধরণের ফেব্রিক এর সংমিশ্রণে বাজারে প্যান্টের রয়েছে বিশাল সমারহ।

এত সব বৈচিত্রতার মাঝে নিজের জন্য উপযুক্ত প্যান্টটি খুজে বের করা সত্যিই অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়। এই সমস্য খানিকটা হলেও দুর করতে প্যান্ট কত প্রকার – বিষয়টির উপর একটি পোষ্ট নিয়ে হাজির হলাম।

তবে, প্যান্ট কেনার আগে কয়েকটি বিষয় বিশেষভাবে দেখে নিতে হবে, তা হল-

  • এটি আপনার শরিরে ফিটিং হবে কিনা;
  • প্যান্টের কাপড়ের রঙ আপনাকে কতটুকু ফুটিয়ে তুলতে সহায়তা করবে;
  • এর ডিজাইন আপনার শরিরের আকার ও বয়সের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে কিনা; ইত্যাদি।

এগুলো মাথায় নিয়ে প্যান্ট কিনা হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

জিন্স প্যান্ট কত প্রকার ও কি কি – তা নিয়ে আলাদা একটি পোষ্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি জিন্স প্যান্ট সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে পোষ্টটি দেখে নিতে পারেন। এছাড়া, প্যান্টের সাথে শার্ট যেহেতু অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত, তাই শার্টের বিভিন্ন কাপড়ের নাম এবং শার্টের প্রকারভেদ  নিয়ে পৃথক দু’টি পোষ্ট বিষদ আলোচনা হয়েছে। ধারণা বৃদ্ধির জন্য দেখে আসতে পারেন।

এবারে চলুন মুল আলোচনায়- প্যান্ট কত প্রকার ও কি কি?

প্যান্ট কত প্রকার ও কি কি?

ড্রেস প্যান্ট

এটি প্যান্টের প্রকারভেদ এর মধ্যে সবচেয়ে কমন ধরণের প্যান্ট যা আপনি আপনার দৈনন্দিক কাজে সর্বদা ব্যবহার করে থাকেন। ড্রেস প্যান্টকে স্যুট ট্রাওজার নামেও ডাকা হয়। ইহা ঐসব প্যান্টকে বুঝায় যা আপনি কোন আনুষ্ঠানিক বা সেমি ফরমাল কোন পরিবেশে পরিধান করতে পারেন। এর কাপড় সাধারণত: ওভেন ফেব্রিক জাতিয় হয়। ব্যয়বহুল কোন স্যুটিং কাপড় থেকেও আপনি হয় শুধু প্যান্ট বা স্যুটের সাথে প্যান্ট বানিয়ে নিতে পারেন।

এই জাতীয় প্যান্টের সামনের অংশে জিপার বা বাটন এর সাহায্যে খোলার বা লাগিয়ে রাখার সুযোগ থাকে।

জিন্স:

জিন্স প্যান্ট সাধারণত: মোটা এবং rough surface বিশিষ্ট কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয় যাকে ডেনিম কাপড় বলা হয়। এই প্যান্টের সমস্ত অংশ জুরে অর্থাৎ যেখানে দুই প্রান্তের কাপড় জোড়া লাগানা হয় সেখানে মোটা সুতা দিয়ে ডাবল সেলাই দেওয়া হয়। এই প্যান্ট rough use বা অনানুষ্ঠানিক পরিবেশে পরিধান করা হয়। তরুণ ও যৌবন বয়সে পদার্পিত কোন মানুষের নিকট এই প্যান্ট খুব জনপ্রিয়।

জিন্স প্যান্ট আবার অনেক ধরণের হতে পারে।

Culottes 

এরা হল একজাতীয় shorts প্যান্ট এর মত যা হাটু বরাবর বা তার চেয়ে কিছুটা লম্বা হয়ে থাকে।

বেল বটম:

এই প্যান্টগুলো কোমর এবং উরু অঞ্চলে টাইট ফিটিং হয় এবং হাটুর নিচ থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত ঢিলা বা প্রশস্ত হতে থাকে। এই ধরণের প্যান্ট সাধারণত: ডেনিম, ভাল মানের কটন এমনকি পলিস্টার জাতিয় ফেব্রিক দিয়ে তৈরি করা যায়।

১৯৬০-১৯৭০ দশকের সময়ে এই ডিজাইনের প্যান্ট বাজারে খুব জনপ্রিয় ছিল। তারপর বেশ সময় ধরে এর প্রচলন তেমন একটি লক্ষ করা যায় নি। মনে হয়েছিল – এর চল বুঝি শেষ হয়ে গেল। কিন্তু ১৯৯০ সাল থেকে পুনরায় এর ব্যবহার চালু হল এবং এখন পর্যন্ত পুরাতন স্টাইলের প্রতিক হিসাবে এর ব্যবহার দেখা যায়।

Chinos:

যদি এমন হয় যে আপনি পড়ার উপযুক্ত কোন প্যান্ট আপনার ওয়ারড্রোবে খুজে পাচ্ছেন না, তাহলে কেন Chinos জাতীয় প্যান্টের কথা চিন্তা করবেন না? এই প্যান্ট অনেকটা relaxed প্রকৃতির যা সহজেই স্টাইল করা যায় এবং পরিধানের পর দেখতেও অসাধারণ সুন্দর হিসাবে নজর কাড়ে।

গরম আবহাওয়ার কোন সময়ে যখন আপনি মোটা ট্রাওজার এর মত কোন প্যান্ট বা স্যুট-কোট পরিহার করেন, তখন Chinos হতে পারে আপনার পছন্দের তালিকার প্রথম। এটি পরিধানে গরমের সময়ে আপনি শীতল অনুভূতি টের পাবেন যা দেখতেও তেমন একটা ক্যাযুয়াল মনে হবে না। ফরমাল কোন প্রোগ্রামেও আপনি অংশগ্রহণ করতে পারেন।

প্যান্ট কত প্রকার

Cords:

এই প্যান্ট ভেলভেট ফেব্রিক দিয়ে তৈরি করা হয়। এর বৈশিষ্ট হল কাপড়ের মাঝে লম্বা-লম্বি ভাবে উচু উচু রিবস থাকে। এখানে base fabric এর উপর অতিরিক্ত ফাইবার দিয়ে বুনন করার ফলে এমন ভার্টিকাল রিব তৈরি হয়।

প্যান্ট কত প্রকার- আলোচ্য বিষয়ের এই কাপড়ের প্যান্ট তুলনামুলক নরম ও টেকসই হয়। এটি প্রধানত: কটন বা কটন ব্লেনডেড ফেব্রিক দিয়ে তৈরি করা হয় যেখানে কিছু কৃত্রিম ফাইবার যেমন রেয়ন বা পলিস্টার মিশ্রিত থাকতে পারে। এই কাপড় দিয়ে প্যান্টের পাশা পাশি আপনি ট্রাওজার,শার্ট ও জ্যাকেটসহ অন্যান্য পোশাক তৈরি করতে পারেন।

Drawstring Trousers:

আপনি যদি আপনার বর্তমানে ব্যবহার্য প্যান্ট এর চেয়ে বেশী আরামদায়ক কোন প্যান্ট খুজে থাকেন, তাহলে এই প্যান্টটি হবে আপনার জন্য যথার্থ। এটি একদিকে যেমন আরামদায়ক প্যান্ট, একই সাথে এটিকে স্টাইলিশ হিসাবে বিবেচিত। এটি পরিধান করে আপনি ঘরের কাজ থেকে শুরু করে বাহিরের যে কোন কাজও নির্দিধায় সামাল দিতে পারেন। এটি পরিধান করে আপনি লম্বা কোন ভ্রমনেও অংশগ্রহন করতে পারেন।

Pajama Pants:

এটি দেখতে drawstring trousers এর মতই পার্থক্য শুধু ফেব্রিক মেটেরিয়ালস। এই প্যান্ট আপনি উল থেকে শুরু করে ফ্লানেল, ব্রাশ কটন ইত্যাদি কাপড় দিয়ে তৈরি করতে পারেন।

Slim-Fit প্যান্ট:

আপনি যদি শরীরের চামড়ার সাথে টাইট ফিটিং এর কোন প্যান্ট পরিধান করে থাকেন তাহলে এটি হবে তার চেয়ে আরোও স্মার্ট পছন্দ। ইহা একটি কমপ্লিট স্যুটও হতে পারে বা শুধু প্যান্ট হতে পারে। কালো, চারকল বা নেভি কালারের কাপড়ের এই ধরনের প্যান্ট পরে আপনি যে কোন ফরমাল বা ক্যাযুয়াল কোন পরিবেশে কাজ করতে পারেন।

এই প্যান্টের প্রধান বৈশিষ্ট হল এটি স্কিট টাইটের মত খুব বেশী টাইট ফিটিং নয়। এটি পরে আপনি স্বাচ্ছন্দে চলাচল বা উঠা-বসা করতে পারেন যা আপনার মর্যাদা ধরে রাখার জন্য সহায়ক হতে পারে।

উল ট্রাউজার:

আপনি যদি জিন্স পরতে পরতে ক্লান্ত হয়ে গিয়ে থাকেন এবং এর চেয়ে তুলনামুলক সহজ ও মার্জিত কোন পোশাক পেতে চান তাহলে উল ট্রাউজার বেছে নিতে পারেন। এই ধরনের প্যান্টের ক্লাসিক স্টাইল আপনাকে অফিস থেকে শুরু করে যে কোন পার্টির পরিবেশেও ভাল খাপ খাওয়াবে।

Cargo:

এটি আধুনিক মনা কোন মানুষের পছন্দের একটি প্যান্ট। সাধারণত: ক্যাযুয়াল বা নৈমিত্তিক কোন কাজে পরিধানের যোগ্য। এই ধরণের প্যান্টের নিচে সামনের দিকে বড় বড় পকেট থাকে যেখানে আপনি জিনিস রাখতে পারেন। সোয়েটার,হুডি বা বাটন-ডাউন শার্টের সাথে এটিকে বেশ ভাল মানায়।

Sweatpants:

এই ধরণের প্যান্ট ঐতিহাসিকভাবে সবচেয়ে পুরানো প্যান্ট। এরা ঢিলে-ডালা ফিটিং এর হয়। কোমরে ইলাস্টিক বা drawstring থাকতে পারে।

Tracksuit:

এই প্যান্টের কাপড় সিন্থেটিক কৃত্রিম ফাইবার দিয়ে তৈরি যা খুব শক্তভাবে উইভিং বা বুনন করা হয়। এরা loose fiting বা কোন কোন ক্ষেত্রে tight fiting হয়ে থাকে।

Joggers:

এটি হল sweatpant এর তুলনায় একটু আধুনিক সংস্করণ যার কোমরে ইলাস্টিক থাকতে পারে।

বন্ধুরা – প্যান্ট কত প্রকার ও কি কি বিষয়টির উপর পোষ্টটি পড়ে কেমন লাগল, কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভূলবেন না।