শার্ট কত প্রকার: যা জেনে আপনি কাজের ধরণ অনুযায়ি শার্ট পরতে পারেন।

শার্ট কত প্রকার ও কি কি বিষয়টির উপর আজকের আলোচনা। বলার অপেক্ষা রাখেনা যে শার্ট বহুল ব্যবহৃত অন্যতম প্রধান একটি পরিধেয় বস্ত্রের নাম। যে কোন চাকুরিজীবি, পেশাজীবি, ব্যবসায়ি, উদ্যোক্তা, ছাত্র বা কোন বিক্রয় কর্মি – সে যেই হোক না কেন অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাকে শার্ট পরিধান করতে হয়।

বিভিন্ন পর্যায়ের কাজ যেমন, অফিসের কাজ, ব্যবসায়িক কাজ, নৈমিত্তিক কাজ ছাড়ও অবশিষ্ট সময়ে কাজের ধরণ অনুযায়ি বিভিন্ন প্রকার শার্টের প্রয়োজন হয়। এজন্য মানুষের বিভিন্ন প্রকার দৈনন্দিন কাজ বা লাইফ স্টাইলের কথা বিবেচনায় রেখে বাজারে রয়েছে হরেক রকম শার্টের প্রাচুর্যতা।  যা দিয়ে আপনার শার্টের চাহিদা পূরণ করতে পারেন।

যারা পরিধেয় কাপড় হিসাবে শার্টকে বেছে নিয়েছেন তাদের প্রত্যেকেরই নিজ নিজ ওয়ারড্রোবে বিভিন্ন শার্টের একটি সংগ্রহ থাকা প্রয়োজন। এটা নিশ্চই আমরা স্বীকার করি বা মেনে নেই। তবে, যে বিষয়টি আমাদের মাঝে সমস্য তৈরি করে তা হল, নিজের ব্যবহারের জন্য কোন কোন ধরণের শার্ট বাছাই করা উচিত।

ইহা অনেকের কাছেই পরিস্কার নয়। এজন্য প্রথমেই শার্টের প্রকারভেদ বা শার্ট কত প্রকার হতে পারে এ বিষয়ে আমাদের একটি প্রাথমিক ধারণা থাকা প্রয়োজন। এই প্রাথমিক ধারণর অংশ হিসাবে শার্টের কাপড়ের নাম এবং অন্যান্য কাপড়ের নাম আপনি জেনে রাখতে পারেন।

শার্ট কত প্রকার ও কি কি- এর উপর চলুন শুরু করা যাক মুল আলোচনা।

শার্ট কত প্রকার ও কি কি:

ক্লাসিক OCBD শার্ট

এর পূর্ণ রুপ হল Oxford-cloth button-down shirt যা এক ধরণের ক্যাযুয়াল বা নৈমিত্তিক শার্ট হিসাবে পরিচিত। এই ধরণের শার্ট বাস্কট উইভ প্রক্রিয়ায় প্রস্তুতকৃত অক্সফোর্ড ফেব্রিক দিয়ে তৈরি করা হয়। এই শার্টে নামের অবশিষ্ট অংশ button-down এর বিশেষত্ব হল এখানে বাটনের সাহায্যে শার্টের কলার যথাস্থানে রাখা হয়।

এই ধরণে শার্ট সচারাচর অন্যান্য শার্টের তুলনা একটু ভারি বা পুরু হয়ে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে এর গঠন প্রকৃতিও চোখে ফুটে উঠার মত।

ড্রেস শার্ট

আজকের দিনের যে কোন আধুনিক মানুষের জন্য ড্রেশ শার্টের প্রয়োজন হয় যা পরিধান করে ফরমাল কোন আনুষ্ঠানে যাতায়ত করা যায়। এজন্য আপনার আলমারিতে একাধিক ড্রেস শার্টের সংগ্রহ থাকা চাই। অনেক সময় আপনার স্যুট-কোট এবং জুতোর সাথে মিলিয়ে এ ধরণের শার্ট ক্রয় করতে দেখা যায়।

এরা হল button-up ধরণের শার্ট যেখানে কলার ব্যাতিত শার্টের সামনের দিকের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত বোতাম থাকে। আর button-down শার্ট এর ক্ষেত্রে অতিরিক্তভাবে কলারে বোতাম লাগানোর ব্যবস্থা থাকে।

ড্রেস শার্ট উচু মানের কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই শার্ট সলিড কালারের বা এক রঙ বিশিষ্ট হয়। ড্রেস শার্ট সাধারনত: ফুল হাতা বিশিষ্ট হয়।

ফ্লানেল শার্ট

ফ্লানেল কাপড় দিয়ে তৈরি শার্টের ডিজাইনগত দিক দিয়ে বিভিন্ন রকমের বৈচিত্র থাকে। এক এক সময় এক এক নতুন ডিজাইনের শার্টের আবির্ভাব হয়। এই কারণে তুরুণ সমাজের কাছে এটি একটি জনপ্রিয় ধরণের শার্ট। সময়ে সময়ে বিভিন্ন ডিজাইনের ফ্লানেল শার্ট কেনার ফলে আপনার আলমারিতে সংগ্রহের পরিমানও বেড়ে যেতে পারে।

বিভিন্ন ইনফরমাল পরিবেশে পরিধানের ক্ষেত্রে এর বহুল ব্যবহার লক্ষ করা যায়। যেমন হতে পারে কোন নির্মাণ কাজের সাইট পরিদর্শনে, বা উইক এন্ডের কোন প্রোগ্রামে অথবা কোথাও বেড়াতে যেতে আপনি এটিকে বেছে নিতে পারেন।

ভাল মানের কাপড় দিয়ে তৈরি ফ্লানেল শার্ট পরিধানে আরামদায়ক ও গরম অনুভুত হয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে এটি পরিধান করা যায়। এটি বেশ মোটা বা পুরু কাপড় দিয়ে তৈরি হওয়ার জন্য শীত কালে এর ব্যবহার বেশি লক্ষ করা যায। ইহা উল বা কটন কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়।

 ডেনিম শার্ট

আমার যে সব কাপড়কে জিন্স কাপড় নামে ডেকে থাকি সেই কাপড় দিয়ে এই শার্ট তৈরি করা হয়। ডেনিমকে timeless textile হিসাবেও অভিহিত করা হয়। এজন্য এর ব্যবহার কখনোও শেষ হবার নয়। বিশেষ করে তরুণ পুরুষ সমাজের নিকট এটি খুব জনপ্রিয় একটি পোশাক।

ডেনিম শার্ট সাধারণত: ক্যাযুয়াল ড্রেস হিসাবে স্বীকৃত। এটি মোটা ধরণের কাপড় হওয়ায় শীতকালে এর প্রচলন বেশী দেখা যায়। ডেনিম শার্ট অনেক ক্ষেত্রে ওভার কোট হিসাবেও ব্যবহৃত হয়।

লিনেন শার্ট

ফ্ল্যাক্স নামিয় উদ্ভিদের আঁশ থেকে উৎপাদিত লিনেন কাপড় দিয়ে এই ধরণের শার্ট তৈরি করা হয়। লিনেন কাপড়ের ফাইবার পাতলা বা সূক্ষ হওয়ার জন্য এই কাপড়ের ভিতর দিয়ে খুব সহজেই বাতাস আসা যাওয়া করতে পারে। ফলে গরম আবহাওয়ার দেশসমুহে এর ব্যবহার অধিক পরিলক্ষিত হয়।

এছাড়াও, অফিসিয়াল বা ফরমাল পরিবেশে পরিধানের জন্যও লিনেন শার্ট বেশ উপযোগী।

অফিসিয়াল বা ফরমাল শার্ট

এটি অনেকটা ড্রেসড শার্টের মতই। এরা সতেজ ও পরিচ্ছন্নতার অধিকারি হয় যা ব্যবহার করে আপনি যে কোন অফিসিয়াল পরিবেশে যেতে পারবেন। অফিশিয়াল শার্ট সাধারণত: শক্ত বা আটশাঁটভাবে বোনা হয় এবং পপলিনের মত খুব মসৃন কটন ফেব্রিক দিয়ে তৈরি করা হয়।

চ্যাম্ব্রে শার্ট

এই ধরণের শার্ট দেখতে ডেনিমের মত। এছাড়াও এই কাপড় দিয়ে তৈরি শার্ট গায়ে দিলে অনেক সময় ফ্লানেলের মতও দেখাতে পারে। কিন্তু কিছুটা উন্নত পর্যায়ের ফ্লানেল বলতে হবে। চ্যাম্ব্রে কাপড় প্লেইন উইভ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় যা টুইল উইভের তুলনায় কিছুটা হালকা ওজনের হয়। যা আপনি জিন্সের কাপড়ের সাথে মিলিয়ে পরিধান করতে পারেন।

এই কাপড়ের শার্ট পরিধান করলে খুব চমৎকার দেখায় এবং এটি পরে আপনি যে কোন কাজই করতে পারেন। এই কাপড়ের বহুমুখি বৈচিত্রতার কারণে এর স্টাইলিং ততটা সহজ নয়।

 হাফ হাতা শার্ট বা ক্যাম্প শার্ট

সাধারণত: ক্যাযুয়াল কাজে হাফ হাতা শার্ট ব্যবহার করা হয়। এই শার্ট দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে আপনি পরিধান করতে পারেন। তবে, গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়ায় এর ব্যবহার অধিক হয়ে থাকে। এই শার্টের কলার কিছুটা প্রশস্ত হতে পারে। এর প্লেইন হতে পারে আবার এত প্যাটার্নও থাকতে পারে। অনেক সময় আপনি পুরো শার্টেই প্রিন্ট করানো হিসাবে পেতে পারেন।

শার্ট কত প্রকার ও কি কি – আর্টিকেলটি উপস্থাপিত তথ্য কেমন লাগল কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। ধন্যবাদ।

4 thoughts on “শার্ট কত প্রকার: যা জেনে আপনি কাজের ধরণ অনুযায়ি শার্ট পরতে পারেন।”

  1. I have learn several good stuff here.
    Definitely worth bookmarking for
    revisiting. I surprise how much effort you place to create this sort of
    great informative site.

Comments are closed.