Last updated on May 11th, 2023 at 01:03 pm
এশার নামাজ কয় রাকাত – প্রশ্নটি সহজ শুনালেও জিজ্ঞাসা অনেক। প্রতি মাসে প্রায় দশ হাজার জন ব্যাক্তি শুধু গুগলে প্রশ্ন করে জানতে চায় এর সঠিক উত্তর। যা একটি অনলাইন টুল থেকে জানা যায়।
গুগলের বাইরেও তো প্রচুর ধর্মপ্রাণ মুসলমান রয়েছে যারা যে কোন মাধ্যমে এর উত্তর খুঁজার চেষ্টা করছেন।
তাই, এ বিষয়ে কিছু সহজ ও সাধারণ প্রশ্নের উত্তর নিয়ে চলে এলাম আজকের পোষ্টে।
প্রথমেই, বলা দরকার – নামাজ মহান আল্লাহ্ তায়ালার সবচেয়ে বড় হুকুম। আমাদের উপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়েছে মহান আল্লাহ্ তায়ালার পক্ষ থেকে।
প্রতি দিন এই পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের মধ্যে এশার নামাজের সিরিয়াল সর্বশেষে। অর্থাৎ প্রথমে ফজর। তারপর জোহর, আছর ও মাগরিব। সবশেষে এশা। এই দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ধারাবাহিকতা।
ইসলাম ধর্মের একজন অনুসারি হয়ে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত নামাজ শিক্ষা করা। যাতে সঠিকভাবে সময়মত নামাজ আদায় করা যায়। মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট নামাজ কবুলের জন্য নামাজের বিভিন্ন প্রকার মাসলা-মাসায়েল রপ্ত করা চাই।
কারণ, কোরআন-হাদিসের বিভিন্ন অংশে নামাজের যে লাভের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা পাওয়ার শর্ত শুদ্ধরুপে নামাজ আদায় করা। শুদ্ধরুপে নামাজ পড়া শিখতে পারলে নামাজের বিনিময়ে যে পুরস্কারের ওয়াদা আছে তা আশা করাটা যুক্তিসঙ্গত বলে বিবেচিত হতে পারে।
এজন্য, সঠিকভাবে নামাজ শিখার অংশ হিসাবেই, আলোচ্য পোষ্টে এশার নামাজ কয় রাকাত ও কি কি এবং কোরআনা হাদিসের আলোকে এশার নামাজের গুরত্ব কেমন- এসব বিষয়ে কিছু তথ্য উপস্থাপন করব।
এশার নামাজ কয় রাকাত ও এর গুরত্ব?
এশার নামাজ কয় রাকাত?
এশার নামাজ কয় রাকাত পড়তে হয় – তা ধারাবাহিকভাবে নিচে উল্লেখ করছি।
- চার রাকাত সুন্নত (গায়রে মুয়াক্কাদা)
- চার রাকাত ফরজ
- দুই রাকাত সুন্নত (মুয়াক্কাদা)
- তিন রাকাত বিতর
- দুই রাকাত নফল
এভাবে, মোট ১৫ রাকাত হল। তবে, এখানে একটি বিষয় বলা প্রয়োজন – তা হলো, বিতর নামাজ কিন্তু এশার নামাজের অংশ নয়। আপনি ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পূর্বে যে কোন সময়েই বিতর নামাজ পড়তে পারেন।
আর সুন্নতে মুয়াক্কাদা এবং সুন্নতে গায়রে মুয়াক্কাদা বিষয়ে যে কথাটি হয়ত আপনি জেনে থাকবেন, তা এক কথায় যদি বলি –
সুন্নতে মুয়াক্কাদা আদায় করা জরুরী কিন্ত সুন্নতে গায়রে মুয়াক্কাদা আদায় করতে পারলে ভাল কিন্তু আদায় না করলেও চলে।
তাহলে, এশার নামাজ কয় রাকাত – এর উত্তর আশা করি পেয়ে গেছেন। যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
এবারে চলুন এশার নামাজের গুরত্ব নিয়ে কথা বলি।
এশার নামাজের গুরত্ব কেমন?
এশার নামাজের গুরত্ব প্রসঙ্গে বলার আগে একটি কথা বলে রাখা প্রয়োজন। যদিও তা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রত্যেক ফরজ নামাজই সমভাবে গুরত্বপূর্ণ। ইসলামিক স্কলারগন বলেন, কোন ব্যক্তির সারা জীবনের সুন্নত নামাজে এক রাকাত ওয়াজিব নামাজের সমতুল্য হবে না।
আবার, সারা জীবনের সুন্নত ও ওয়াজিব নামাজ দিয়ে এক রাকাত ফরজ নামাজের সমান হবে না। তাই, বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের প্রতিটি ওয়াক্ত কতটা মুল্যবান।
তবে, হাদিস গ্রন্হের সুত্র মারফত আমরা জানতে পেরেছি যে, ফজর এবং এশার নামাজের একটি বিশেষ গুরত্ব রয়েছে। এই দুই ওয়াক্ত নামাজের দ্বারা মু’মিন এবং মোনাফেক এর মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যাবে। যার সুত্র হিসাবে নিচের হাদিসের ভাবার্থ উল্লেখ করা হলো-
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত মুহাম্মদ (সাল্লেল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যার মর্মার্থ এমন যে, মুনাফিকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন নামাজ হচ্ছে এশা এবং ফজরের নামাজ। যদি তাদের এই দুই ওয়াক্ত নামাজের লাভ জানা থাকত তাহলে জমিনের উপর হামাগুড়ি দিয়ে হলেও নামাজে উপস্থিত থাকত।
স্বাভাবিক দৃষ্টিকোন থেকে বুঝা যায়, রাতের বেলায় এবং বেলা উঠার আগে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজে শরীক হওয়া কঠিন কাজ বটে। তবে, যারা প্রকৃত বিশ্বাস স্থাপনকারি অর্থাৎ মু’মিন তাদের নিকট এটি মোটেও কোন কঠিন কাজ নয়।
ঈমানি শক্তি তাদের আল্লাহ্ তায়ালার সমস্ত হুকৃম আহকাম পালনে সাহায্য করবে।
আর একটি কথা, যারা নামাজ পড়ে অভ্যস্থ তারা জানেন যে, নামাজ আদায়ের দ্বারা অন্তরে এক বিশেষ প্রকার প্রশান্তি লাভ হয়। আপনি যদি এশার নামাজ আদায়ে সচেষ্ট থাকেন, তাহলে রাতের নিদ্রা ভাল হবে বলে আশা করা যায়।
অপর এক হাদিস থেকে জানা যায়, যে ব্যক্তি এশার নামাজ জামাতে আদায় করল সে যেন অর্ধ রাত্রি এবাদতে শামীল থাকল। আবার যদি সে ফজরের নামাজও জামাতে আদায় করতে পারে; তাহলে সে সারা রাত্রি এবাদতের নেকি হাসিল করল।
কাজেই, ভাই ও দোস্ত – উপরের আলোচনা থেকে সহজেই বুঝা গেল এশার নামাজের গুরত্ব কত বেশী।
এশার নামাজ কয় রাকাত এবং এর গুরত্ব বিষয়ের উপর আলোচ্য পোষ্টে যে সব তথ্য উপস্থাপন করা হলো – এর উপর কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানানোর অনুরোধ থকাল।