Last updated on May 14th, 2023 at 05:40 am
জিন্স প্যান্ট ডেনিম ফেব্রিক দিয়ে তৈরি হয় যা আমাদের অজানা নয়। মে ২০, ১৮৭৩ সালে এটি প্রথম আবিস্কৃত হয়। আগামি ২০২৩ সালে এর বয়স হবে ১৫০ বছর। চিন্তা করা যায়?
মজার বিষয় হল, এত পুরানো আবিস্কৃত কোন জিনিস হলেও এর জনপ্রিয়তা কিন্তু এখনোও বেশ উর্ধমুখি। সিএনএন সুত্র থেকে জানা যায়, অ্যামেরিকায় প্রতি বছর জিন্স প্যান্টের বিক্রির পরিমান ৪৫০ মিলিয়ন পিস।
তবে, প্রথম আবিস্কারের পর, ডেনিম ফেব্রিক বর্তমানে আরোও উন্নতি সাধন করেছে। হয়ে গেছে এর অনেক প্রকারভেদ।
ডেনিম ফেব্রিক কত প্রকার তার উপর অন্য একটি পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া, প্যান্টের প্রকারভেদ নিয়েও আরেকটি পোষ্ট দেওয়া আছে। সেগুলো দেখে আসতে পারেন।
যাহোক, এই আর্টিকেলের মুল আলোচ্য বিষয় হল, জিন্স প্যান্ট কত প্রকার – তা নিয়ে। যেহেতু জিন্স প্যান্ট ডেনিম কাপড় দিয়ে তৈরি হয়, তাই ডেনিম ফেব্রিক বিষয়ে উপরে দু’ একটি কথা বল হল।
তাহলে চলুন চলে যাই মুল আলোচনায়।
Table of Contents
জিন্স প্যান্ট কত প্রকার?
জিন্স প্যান্ট অনেক প্রকারের হয়। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের মাঝেও এটি অনেক জনপ্রিয়। জিন্স প্যান্টের প্রকারভেদ আলোচনায় আমি প্রথমে এটিকে ছেলেদের জন্য ও মেয়েদের জন্য এই দুই ব্রড ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছি।
তারপর, ছেলেদের জন্য জিন্স প্যান্ট কত প্রকার ও মেয়েদের জন্য কত প্রকার – তা একে একে উল্লেখ করেছি।
প্রথমেই চলুন, দেখে নেওয়া যাক, মেয়েদের জিন্স প্যান্ট কত প্রকার।
মেয়েদের জিন্স প্যান্ট
Straight leg
এই জিন্স প্যান্ট পা বরাবর সোজা করে তৈরি করা হয়। যা অনেকটা সাদাসিদে বলেই ধরে নেওয়া হয়। তেমন কোন স্টাইলিশ ডিজাইনের নয়। তবে, এটি স্টাইলের বাইরেও নয়। বলা যায়, এটি জিন্স প্যান্টের একটি ক্লাসিক ডিজাইন।
এর ডিজাইনের বৈশিষ্ট হল, কোমর থেকে পা বরাবর এর চওড়া ধারাবাহিকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ন রাখা হয়। এই প্যান্টের উপরের অংশ কিছুটা চাপা থাকে এবং নিচের দিকে বিশেষ করে পায়ের গোড়ালি অংশে ঢিলা করে তৈরি করা হয়।
নিচের ছবিটি দেখলে আরোও পরিস্কার হয়ে যাবে।
Slim Fit
আমরা অনেকেই স্লিম ফিট জিন্স প্যান্টের বিষয় সন্দেহ থাকতে পারে। এটি অনেকটা স্কিন টাইট জিন্সের মতই বলা চলে। এটি কোমর থেকে পা পর্যন্ত বরাবরই টাইট ফিটিং হয়। তবে, পায়ের গোড়ালি অংশে কিছুটা ঢিলা হয়ে থাকে যা প্যান্ট পরিধান ও খুলতে সহায়তা করে।
Skinny Jeans
এই ধরণের জিন্স প্যান্ট দেহের কোমর, উরু এবং হাটুর নিচের পিছনের অংশেও টাইট ফিট করে তৈরি করা হয়। পায়ের গোড়ালি অংশে শুধু কিছু পরিমান ঢিলা থাকে যা পরিধানের সময় কাজে লাগে। এক কথায় বলা যায় ইহা আপনার শরীরের সাথে লেগে থাকে এমন ধরণের প্যান্ট। প্যান্টটি আধুনিক মনভাবের মেয়েদের খুবই পছন্দের এক পোশাক।
যদি আপনি লম্বা হন এবং আপনার পা দু’টিও লম্বা হয়, তবে এটি আপনাকে খুব সুন্দর দেখাবে।
Boyfriend Jeans
এটি পরলে আপনাকে একটু বিষাদগ্রস্থ মনে হতে পারে। এই প্যান্ট তৈরির সময়ই এর নির্দিষ্ট কিছু অংশ rectangle আকারে ছিড়ে ফেলা হয়। এমনভাবে কাজটি করা হয় যাতে ছেড়া অংশের ঠিক উপরের দিকে শুধু আলগা সুতা দেখা যায়।
এই ধরনের প্যান্ট কিছুটা ঢিলে-ঢালা হয়। তেমন একটা টাইট ফিটিং নয়।
Loose Fit
লুজ ফিটিং জিন্স রুচিশীল সমাজে এক পছন্দনিয় ডিজাইন হিসাবে সমাদৃত হয়েছে। এর কয়েকটি উপকারি দিক আছে।যার মধ্যে প্রধান বৈশিষ্ট হল এই প্যান্ট পরিধানের পর আরাম লাগে। এটি পরিধান অবস্থায় সহজে উঠা-বসা বা যে কোন কাজ করা যায়।
Flared Cut
এটি কোমর বা মাজা এবং শরীরের উরু অঞ্চলে টাইট হয়। এরপর, হাটুর নিচের অংশ থেকে ঢিলা হতে হতে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। পায়ের গোড়লির নিচে ঢিলার পরিমান সবচেয়ে বেশি হয়।
১৯৭০ এর দশকে এই ডিজাইন সমাজে বেশ জনপ্রিয় ছিল যা বেল বটম নামে পরিচিত।
Bootcut
এই জিন্স হাটুর উপরের অংশে টাইট থাকে এবং হাটুর নিচ থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত ঢিলা হতে থাকে। যা flared jeans এর ক্ষেত্রেও একই রকম। তবে পার্থক্য হল এর গোড়ালি অংশের চওড়ার পরিমান flared jeans এর তুলনায় বেশি হয়। যাতে, বুট আকারের কোন জুতা পরিধান করলে দেখতে মানানসই হয়।
১৯৯০ দশকের শুরু থেকে ডিজাইনটি ভাল জনপ্রিয়তা পায়।
Wide Leg
এই ডিজাইনের জিন্স প্যান্ট উপর থেকে নিচ পর্যন্ত একই অনুপাতে প্রশস্থ বা চওড়া হয়। এমন নয় যে, বেল বটমের মত প্যান্টের উপরের অংশে চাপ ও নিচের দিকে চওড়া।
এরা উরু অঞ্চলেও চওড়া এবং হাটুর নিচেও চওড়া।
Distressed
এই জিন্স প্যান্টও বয়ফ্রেন্ড জিন্সের মত স্টাইলের অংশ হিসাবে প্যান্টের বেশ কয়েক জায়গায় ছিড়া হয়। তবে, এই ছেড়ার পরিমান বয়ফ্রেন্ড জিন্সের মত এত বেশি অংশ জুরে নয়। ছোট ছোট পরিমানে ছেড়া যা উভয় পায়ের সামনের অংশের উপরের দিকে দেখা যায়।
নিচে ছবির দিকে তাকালে আরোও ভাল বুঝা যাবে।
এবারে চলুন ছেলেদের জিন্স প্যান্ট নিয়ে শুরু করি।
ছেলেদের জিন্স প্যান্ট
Regular Fit Jeans
এটি একটি ক্লাসিক স্টাইলের জিন্স প্যান্ট যা শরীরের কোমর থেকে হাটু পর্যন্ত সোজা বরাবর হয়। এই প্যান্টের দৈর্ঘ গোড়ালির ঠিক উপরে থাকে এবং নিচের শেষ প্রান্ত কিছুটা চওড়া হয়। যার ফলে খুব আরামের সাথে পরিধান করা যায় এবং খোলাও যায়।
এই ধরণের জিন্স প্যান্ট সাধারণত: ঐ সব ছেলেদের জন্য প্রযোজ্য যারা মাঝা মাঝি আকারের। খুব স্লিমও নয়, আবার খুব মোটাও নয়, এমন মানুষকে খুব সুন্দর দেখায়।
Slim Fit Jeans
এটি পুরুষের পাশাপাশি মেয়েদের মাঝেও বেশ জনপ্রিয়। এজন্য মেয়েদের ব্যবহৃত জিন্সের প্যান্ট এর জায়গায় এর আলোচনা করা হয়েছে।
এই ধরণের প্যান্ট যেহেতু skinny jeans এর সাথে সন্দেহ তৈরি করে তাই সন্দেহ দুর করতে একটি কথা বলা দরকার। তা হল, slim fit জিন্স skinny jeans এর মত এত টাইট ফিট নয়। এর চেয়ে তুলনামুলক কিছুটা ঢিলা হবে।
Skinny Blue Jeans
এরা slim fit জিন্স এর মত কোমর থেকে পা পর্যন্ত পায়ের প্রস্থ অনুযায়ি টাইট হয়। পরিধানে অসুবিধা দুর করার জন্য এখানে ডেনিম কাপড়ের সাথে কিছু সিনথেটিক পদার্থ যোগ করে দেওয়া হয়। ফলে কিছুটা ইলাস্টিসিটি তৈরি হয়।
এই প্যান্টে পায়ের অংশ ফোকাস হয়। এজন্য, লম্বা মানুষের জন্য এটি দেখতে ভাল দেখায়।
Loose Fit Jeans
এই প্যান্ট ঢিলে ঢালা হওয়ায় আপনি এটি পরিধান করে বেশ রিল্যাক্স অনুভব করবেন। এটি পরিধান করলে প্যান্টের ভিতরে কিছুটা খালি স্পেস থাকবে যার ফলে কাজের সময় এটি পরিধান করলে তেমন অসুবিধা মনে হয় না।
যারা মোটা আকারের মানুষ তাদের জন্য এটি অধিক উপযুক্ত। আরেকটি উপকারি দিক হল, এটি পরিধানের সময় শরীর ঘেমে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমিয়ে দেয়।
Tapered Fit Jeans
এই ধরণের জিন্স পরিধান করলে শরীরের উরু এবং হিপ অঞ্চলে বেশ আরামদায়ক মনে হবে। এটি পায়ের নিচের দিকে অল্প অল্প করে ঢোলা হতে থাকে।
যারা স্লিম বা স্কিন টাইট প্যান্ট পরে অস্বস্তিবোধ করেন, তারা এটিকে বেছে নিতে পারেন।
Low Rise Jeans
Waist এবং pelvis এর তলার মধ্যবর্তি দুরত্বের হিসাব অনুযায়ি যেকোন প্যান্টের rise পরিমাপ করা হয়। রেগুলার প্যান্টের বেলায় গড়ে এর পরিমান থাকে ১২ ইঞ্চি।
যাহোক, low rise jeans এর ক্ষেত্রে এদের মধ্যবর্তি দুরত্বের পরিমান হবে ৮ ইঞ্চি। এমনকি কোন কোন ডিজাইনের ক্ষেত্রে এটি ৩-৪ ইঞ্চি হিসাবেও দেখা যায়। তবে, তা দেখতে দৃষ্টিনন্দন হয়না।
এই ধরণের প্যান্টগুলি বাধ্য হয়েই নাভির নিচে পরতে হবে। তাছাড়া উপায় নেই। বিশেষ করে স্লিম ফিগারের কোন ছেলেকে এটি ভাল মানাতে পারে।
Stonewashed Jeans
এসিড ওয়াস, স্টোন ওয়াস বা ফ্যাড করা রঙের জিন্স ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ দশক পর্যন্ত অনেক জনপ্রিয় ছিল। এই জিন্স কাপড় পিউমিক স্টোন, পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট বা অন্য কোন রাসায়নিক পদার্থের সাহয্যে এর আসল রঙ বিদীর্ন করা হয়। স্টাইলের অংশ হিসেবেই এই কাজটি করা হয়।