টরে কাপড়ের দাম নিয়ে পাঠকদের মাঝে বেশ একটি জানার কৌতুহল থাকে। কারণ, এটি ফেব্রিকস এর জগতে বাংলাদেশে খুব জনপ্রিয় এক কাপড়ে নাম। পুরুষের জুব্বা, পাঞ্জাবী, স্কুল ড্রেস থেকে শুরু করে হরেক রকম পরিধেয় বস্ত্র এই কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়।

কাপড়টির জনপ্রিয়তার মুল কারণ এটি পরিধানে আরামদায়ক ও টেকসই। এটি তুলনামুলক কম ময়লা হয় এবং ময়লা হলেও খুব সহজে ডিটারজেন্ট দিয়ে পরিস্কার করা যায়। কারণ, টরে কাপড় এমন অভিনব প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি হয় যে, এর ভিতর ময়লা বা ধুলো বালি শক্তভাবে যুক্ত হতে পারে না।

তাই, বিশ্বের বিভিন্ন ধনী দেশ গুলোর ন্যায় আমাদের দেশেও রয়েছে এর বিস্তর ব্যবহার।

যাহোক, আলোচ্য পোষ্টে টরে কাপড়ের বৈশিষ্ট, টরে কাপড়ের দাম, জাপানি টরে কাপড়ের দাম, টরে কাপড় চেনার উপায় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

পোষ্টের শেষ পর্যন্ত সাথেই থাকুন।

টরে কাপড় কি?

এটি একধরণে সিন্থেটিক বা কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করা কাপড় যেখানে থাকে পলিস্টার ও নাইলনের মিশ্রন। তবে, বর্তমান উন্নত প্রযুক্তির বদৌলতে উদ্ভিদজাত উৎস থেকেও এ কাপড় উৎপাদন করা যাচ্ছে। জাপানের বিখ্যাত টরে কম্পানি এ ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেছে।

উল্লেখ্য যে, এই টরে ইন্ডাষ্ট্রিজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় কার্বন ফাইবার উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান।

টরে কাপড়ের বৈশিষ্ট কি?

এ ধরণের কাপড়ের রয়েছে খুব উন্নত মানের বৈশিষ্ট। যার কয়েকটি নিচে উল্লেখ করা হলো-

  • কাপড়টি সিন্থেটিক ফাইবার দিয়ে তৈরি।
  • সিন্থেটিক ফাইবার এর প্রধান দু’টি উপাদান পলিস্টার ও নাইলন।
  • কৃত্রিম ফাইবার দিয়ে তৈরি হলেও এ ধরণের কাপড় পরিধানে খুব আরামদায়ক।
  • শীত বা গ্রীষ্ম উভয় মৌসুমে সমানভাবে পরিধান করা যায়।
  • এটি খুব টেকসই ধরণের ফেব্রিকস যা আপনি কয়েক বছর ধরে ব্যবহার করতে পারেন।
  • কাপড়টির ফাইবার সুক্ষ্ম হওয়ায় এর ভিতর দিয়ে সহজে বায়ু চলাচল করতে পারে।
  • এটি ব্যবহারে কম ময়লা হয় এবং কাপড়ের লেগে থাকা ময়লা খুব দ্রুত ও সহজে পরিস্কার হয়ে যায়।

টরে কাপড়ের বৈশিষ্ট এর উপর এখানে কিছু পয়েন্ট উল্লেখ করা হলো। এর বাইরে বৈজ্ঞানিক বা গঠনগত কিছু বৈশিষ্ট রয়েছে যা পরবর্তিতে এখানে যোগ করা হবে।

টরে কাপড়ের দাম কত?

প্রশ্নটি খুব সুন্দর। হতে পারে কোন পণ্য অনেক ভালো। কিন্তু একই সাথে তা হতে হবে ক্রয় ক্ষমতার ভিতর। হ্যা, এই কাপড়ের দাম বলা চলে আপনার নাগালের মধ্যেই আছে।

তবে, টরে কাপড়ের দাম বিভিন্ন অবস্থা ভেদে বিভিন্ন রকম হতে পারে। আপনি যদি পাইকারি মার্কেট যেমন ইসলামপুর বা বাবুরহাট থেকে কিনেন তাহলে এক রকম দাম হবে।

আবার, খুচরা বাজার থেকে কিনলে আরেক রকম দাম হবে।

এখানে আমি খুচরা মার্কেটে টরে কাপড়ের দাম সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিচ্ছি।

বাংলাদেশের মার্কেটে সাধারণত: চার ধরণের টরে কাপড়ে আধিক্য লক্ষ করা যায়। তারা হলো- বাংলাদেশী টরে, চায়না টরে, থাইল্যান্ড এর টরে ও সবচেয়ে বিখ্যাত জাপানি টরে।

টরে কাপড়ের দাম উপরে উল্লেখিত প্রকার ভেদে বিভিন্ন রকম হয়। কারণ তাতে মানের তারতম্য লক্ষণীয়।

সবচেয়ে কম দামের টরে কাপড় হলো বাংলাদেশী টরে। যা আপনি খুচরা বাজার থেকে গজ প্রতি ১২০-১৩০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যেতে পারেন।

তারপর, চায়না টরে যা প্রতি গজের দাম হতে পারে ১৫০ টাকার ভিতরে। অপরদিকে, থাইল্যান্ড এর টরে য কিনা প্রেসিডেন্ট টরে নামেও পরিচিত; এটি আপনি ২২০-২৫০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন।

সবচেয়ে দামি টরে হলো জাপানি টরে। জাপানি টরে কাপড়ের দাম গজ প্রতি ৫০০-৬০০ টাকার মধ্যে হতে পারে।

যাহোক, উপরে যে দাম এর কথা উল্লেখ করা হলো তা আপেক্ষিক। সময় ভেদে বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তা পরিবর্তন হয়।

টরে কাপড় চেনার উপায় কি?

এ কাপড় বাংলাদেশে এত বেশী সমাদৃত যে প্রায় প্রত্যেকেরই কাপড়টি সম্পর্কে কম বেশী ধারণা আছে। তবে, টরে কাপড় চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো এর মসৃনতা। যা হাতে ধরেই আপনি টের পেয়ে যাবেন। যেহেতু এখানে কটন থাকেনা, অর্থাৎ পলিস্টার ও নাইলনের মিশ্রনে এটি তৈরি হয় তাই টরে কাপড়ের সাথে আপনি পলিস্টার বা নাইলন কাপড়ের কিছু বৈশিষ্ট মিলিয়ে দেখেও চিনতে পারবেন।

আরোও দেখুন – কাপড় চেনার উপায়