Last updated on May 9th, 2023 at 05:36 pm
ট্রাইগ্লিসারাইড কি বা কাকে বলে, তার উপর আমাদের কম বেশি ধারণা আছে। তবে, ট্রাইগ্লিসারাইড কেন বাড়ে বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের স্বচ্ছ একটি ধারণ থাকা প্রয়োজন। তা না হলে, রোগটি যেহেতু নিরব ঘাতক, তাই পূর্ব থেকে সচেতন না হলে বিপদ।
ট্রাইগ্লিসারাইড হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য পরিমাপ করার গুরত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম। আপনার হার্ট সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা যাচাই করার একটি উপায়। আপনার যদি ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেশী পাওয়া যায়, তখন অনেক ধরণের জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।
তাই, আপনি যদি রক্ত চাপ এবং কোলেস্টেরল লেভেলের উপর নিয়মিত নজর রাখেন, তাহলে এর বাইরে আর একটি জিনিস আছে যা আপনাকে মনিটরের তালিকায় যোগ করতে হবে। তা হল ট্রাইগ্লিসারাইড।
এক কথায়, আপনার ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে গেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে। তবে, আশার কথা হচ্ছে, আপনি যদি স্বাস্থ্যসম্মত জীবন-ধারণ পদ্ধতি মেনে চলতে অভ্যস্থ হতে পারেন, তাহলে এটি কমিয়ে আনা কঠিন কোন কাজ নয়।
ট্রাইগ্লিসারাইডের উপর এক নজরে কিছু তথ্য:
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মত স্বাস্থ্য সচেতন দেশেও এক তৃতীয়াংশের অধিক প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেশি পাওয়া গিয়েছে।
- শরীরে অধিক মাত্রায় ট্রাইগ্লিসারাইডের উপস্থিতি atherosclerosis এবং fatty liver disease এর ঝুঁকি তৈরি করে। এছাড়াও, এর ফলে পেনক্রিয়াসে প্রদাহ তৈরি হতে পারে।
- ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমান বেশি হলে ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- ট্রাইগ্লিসারাইড হল vegetable oil এবং প্রাণিজ চর্বির প্রধান উপাদান।
- ট্রাইগ্লিসারাইড পরীক্ষার ৯-১২ ঘন্টা আগে থেকে উপবাস থাকতে হয়।
- রক্তে স্বাভাবিক ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমান প্রতি ডেসিলিটারে ১৫০ মিলিগ্রাম (mg/dl)।
- পরিবর্তিত লাইফ স্টাইল অনুসরণে করে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেডিকেশন এর মাধ্যমে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমান স্বাভাবিক পর্যায়ে কমিয়ে আনা সম্ভব।
আলোচ্য পোষ্টে ট্রাইগ্লিসারাইড কি, ট্রাইগ্লিসারাইড কেন বাড়ে, ট্রাইগ্লিসারাইড বেশি হলে কি হয়, ট্রাইগ্লিসারাইড কমানোর উপায় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে নিয়ে আলোচনা করা হবে।
চলুন, দেখে নেই।
Table of Contents
ট্রাইগ্লিসারাইড কেন বাড়ে – ট্রাইগ্লিসারাইড বেশি হলে কি হয়?
ট্রাইগ্লিসারাইড কি?
ট্রাইগ্লিসারাইড হল এক প্রকার ফ্যাট বা লিপিড যা রক্তে পাওয়া যায়। কোলেস্টেরলও এক প্রকার লিপিড যা রক্তে থাকে। এরা শরীরের বিভিন্ন অংশে জমা থাকে পরবর্তিতে শরীরের প্রয়োজন হলে শক্তি সরবরাহের জন্য। এজন্য ট্রাইগ্লিসারাইড শরীরে শক্তি সরবরাহের খুব ভাল এক উৎস। শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইডের স্বাভাবিক মাত্রা উপস্থিতি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি।
কিন্তু শরীরে দৈনিক ক্যালরি গ্রহণের মাত্রা ক্যালরি বার্নের তুলনায় যদি অধিক হয় তখন অতিরিক্ত ক্যালরি ফ্যাট হিসাবে শরীরে জমা হতে থাকবে। চর্বি জাতিয় খাবার শরীরে বার্ন হওয়ার তুলনায় বেশি খেলেও রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমান বেড়ে যাবে।
ট্রাইগ্লিসারাইড একটি কমন রোগ হওয়া সত্ত্বেও অনেক সময় আমাদের অজানা থেকে যায়। এজন্য আমাদের শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইডের স্বাভাবিক মাত্রা কত এবং স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কত বেশি হলে ক্ষতির কারণ- সে বিষয় জানা দরকার।
ট্রাইগ্লিসারাইড নরমাল রেঞ্জ কত?
যে কোন ব্যক্তি যার বয়স ২০ বছরের বেশি তার শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইড ও কোলেস্টেরলের মাত্রা জানার জন্য নিয়মিত পরীক্ষা করতে হয়। এখানে উপবাস অবস্থায় রক্ত পরীক্ষায় ট্রাইগ্লিসারাইডের বিভিন্ন মাত্রা উল্লেখ করা হল-
- স্বাভাবিক: ১৫০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার এর কম
- বর্ডারলাইন: ১৫০-১৯৯ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার
- হাই: ২০০-৪৯৯ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার
- খুব হাই: ৫০০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার বা তারও বেশি
ট্রাইগ্লিসারাইড ও কোলেস্টেরলের মধ্যে পার্থক্য
ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কোলেস্টেরল উভয়েই লিপিড, কিন্তু ভিন্ন প্রকৃতির যা রক্তে প্রবাহমান থাকে। উভয়েই শরীরে তৈরি হতে পারে।
তবে, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কোলেস্টেরল এর মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল- কোলেস্টেরল শরীরে কোষ তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয় এবং কিছু সুনির্দিষ্ট হরমোন তৈরির কাজেও এর ব্যবহার হয়। এছাড়া, কোলেস্টেরল শরীরের অনেক ক্ষেত্রে building block হিসাবে কাজ করে এবং শরীরের গঠন পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখে। অপরপক্ষে ট্রাইগ্লিসারাইড মেটাবলিজমের মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন করে যা শরীর ব্যবহার করে প্রয়োজনিয় কাজ সম্পন্ন করতে ব্যবহার করে।
কোলেস্টেরল শরীর গঠনে কাজ করে। আর, ট্রাইগ্লিসারাইড শক্তি উৎপাদনে খরচ হয়।
শরীর তার প্রয়োজনের সব কোলেস্টেরল দেহের ভিতর তৈরির ক্ষমতা রাখে, অপরদিকে ট্রাইগ্লিসারাইডের ক্ষেত্রে বাহির থেকে খাদ্য হিসাবে গ্রহন করতে হয়। যে খাদ্য আমরা খাই তা থেকে ট্রাইগ্লিসারাইড তৈরি হয়।
রক্ত পরিক্ষার মাধ্যমে কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড উভয়ের মাত্রাই জানা যায়। রক্ত পরীক্ষায় আপনি HDL কোলেস্টেরল এবং LDL কোলেস্টেরল সম্পর্কেও জানতে পারেন। HDL কোলেস্টেরলকে ভাল কোলেস্টেরল বলা হয় এবং LDL কোলেস্টেরলকে খারাপ কোলেস্টেরল বলা হয়।
খাবার খাওয়ার পর রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়। এজন্য, শরীরে সঠিক ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা জানার জন্য পরীক্ষার কমপক্ষে ১২ ঘন্টা আগে থেকে উপবাস থাকতে হয়।
ট্রাইগ্লিসারাইড বেশি হলে কি হয়?
আপনি নিশ্চয়ই রক্ত নালি সম্পর্কে অবগত আছেন। আমরা জানি রক্ত নালি দু’ প্রকার – শিরা ও ধমনী। শিরা দুষিত রক্ত বহন করে এবং ধমনি পরিশুদ্ধ রক্ত বহন করে। শিরা এবং ধমনীকে ইংরেজিতে বলা হয় যথাক্রমে ভেইন এবং আর্টারি।
যাহোক, আর্টারি এর মাধ্যমে শরীরের সমস্ত কোষসমুহে অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছে দেওয়া হয়। রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে গেলে এই আর্টারির ভিতরের প্রাচিরে তা জমা হয়ে প্রাচির শক্ত ও পুরু হয়ে যায়। এই অবস্থাকে atherosclerosis বলা হয় যা পরবর্তিতে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং অন্যান্য হৃদরোগের ঝুঁকি তৈরি করে।
রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড খুব বেশি পরিমানে বেড়ে গেলে পেনক্রিয়াসে তীব্র প্রদাহ তৈরি করে।
হাই ট্রাইগ্লিসারাইড মেটাবলিক সিনড্রোমসহ আরোও অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে, যেমন ওবেসিটি, হাই ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস ও হাই কোলেস্টেরল ইত্যাদি। এক পর্যায়ে, পেট ও কোমর অঞ্জলে খুব বেশি পারিমানে ফ্যাট জমা হয়।
ট্রাইগ্লিসারাইড কেন বাড়ে?
রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যাওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। ট্রাইগ্লিসারাইড কেন বাড়ে বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা থাকলে আপনি পূর্ব থেকেই সতর্ক হতে পারবেন।
সাধারণ অর্থে জেনে রাখা উচিত – আপনি খাদ্যের মাধ্যমে যদি অধিক ক্যালরি গ্রহণ করেন যা আপনি সারা দিনে বার্ন করতে পারেন না। ফলে, অবশিষ্ট ক্যালরি দেহে ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ার কারণ হয়।
এরপর, যে সব রোগের কারণে ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ে তা উল্লেখ করছি –
- টাইপ-২ ডায়াবেটিস বা প্রি-ডায়াবেটিস
- হাই ব্লাড প্রেসার
- ওবেসিটি
- কিডনি রোগ
- প্রচুর মদ্যপান
- থাইরয়েড হরমনের পরিমান কমে যাওয়া
- কিছু জেনেটিক অবস্থা যা ফ্যাট থেকে শক্তি তৈরিতে বাধা দেয়।
এছাড়া, সুনির্দিষ্ট কিছু ঔষধ সেবনের কারেণে হতে পারে, যেমন-
- বিটা ব্লকার
- ডায়রিউটিকস
- ইস্ট্রোজেন
- জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি
- স্টেরয়েড, ইত্যাদি।
ট্রাইগ্লিসারাইড এর লক্ষণ কি?
হাই ট্রাইগ্লিসারাইডের ক্ষেত্রে বাহ্যিকভাবে কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না। কিন্তু যদি এই অবস্থা জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে তাহলে শরীরের চামরার নিচে ফ্যাট জমা হতে দেখা যায়। একে xanthomas বলা হয়।
খুব বেশি পরিমানে ট্রাইগ্লিসারাইড হলে পেনক্রিয়াসে প্রদাহজনিত ব্যাথা অনুভব করা যেতে পারে।
ট্রাইগ্লিসারাইড কমানোর উপায়?
স্বাস্থ্যসম্মত জীবনের উপর চলা হচ্ছে মুল হাতিয়ার, যা নিম্নরুপ হতে পারে-
- দৈনিক শরীর চর্চায় অংশ নেওয়া। এর অংশ হিসাবে আপনি দৈনিক কমপক্ষে ৩০ মিনিট করে পায়ে হাটার মাধ্যমে শারীরিক কার্যক্রম শুরু করে দিতে পারেন। নিয়মিত ব্যায়াম করা ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে সাহায্য করে এবং ভাল কোলেস্টেরলকে জাগিয়ে তোলে। দৈনিক ৩০ মিনিট করে হাটার পর এর সাথে আরোও কোন শরীর চর্চা যোগ করে নিতে পারেন।
- সুগার এবং পরিষোধিত কার্বোহাইড্রেট পরিত্যাগ করুন। সিম্পল কার্বোহাইড্রেট যেমন সুগার এবং সাদা আটায় তৈরি কোন খাদ্য ট্রাইগ্লিসারাইড এর পরিমান বাড়িয়ে দেয়।
- আপনার রক্তে যদি ট্রাইগ্লিসারাইড খুব বেশি থেকে থাকে তাহলে ক্যালরি কেটে ফেলার দিকে মনযোগ দিতে হবে। কারণ, অতিরিক্ত ক্যালরি ট্রাইগ্লিসারাইড-এ পরিবর্ত হয় যা ফ্যাট আকারে শরীরে জমা হয়। এজন্য, ক্যালরি গ্রহন কমিয়ে দিলে ট্রাইগ্লিসারাইডও কমে যাবে, এটিই স্বাভাবিক।
- স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বেছে নিন। এজন্য, সম্পৃক্ত ফ্যাটের পরিবর্তে অসম্পৃক্ত ফ্যাট গ্রহন করুন এবং প্রাণিজ ফ্যাট বাদ দিয়ে উদ্ভিদজাত ফ্যাট গ্রহণ করুন, যেমন, অলিভ তৈল, canola oil ইত্যাদি। এছাড়া, লাল মাংসের পরিবর্তে মাছ গ্রহণ করুন। মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড থাকে।
- মদ্যপান পরিহার করুন। এলকোহলে ক্যালরি ও সুগার খুব বেশি থাকে। ফলে, ট্রাইগ্লিসারাইড এর উপর এর বিশেষ এক প্রভাব রয়েছে।
এছাড়াও, অপর এক পোষ্টে ট্রাই গ্লিসারাইড কমানোর ১০টি সহজ উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ট্রাইগ্লিসারাইড কমানোর ওষুধ কি?
স্বাস্থ্যসম্মত লাইফ স্টাইল মেনে চলার পরেও যদি আশানুরুপ উন্নতি না হয়, তাহলে মেডিকেশন পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। এজন্য নিচের ঔষধগুলি ব্যবহৃত হয়-
- ফাইব্রেট যেমন, lopid, Tricor ও Fibricor. মারাত্মক পর্যায়ে কিডনি ও লিভার রোগ থাকলে এই জাতিয় ঔষধ ব্যবহার করা হয় না।
- নিকোটিনিক এসিড বা নিয়াসিন: এরা ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে সাহায্য করে।
- মাছের তৈল: এর অপর নাম ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড যা আপনার ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে ভাল কাজ করে।
ট্রাইগ্লিসারাইড কমানোর ব্যায়াম আছে কি?
নিয়মিত শরীর চর্চা বা ব্যায়াম ট্রাইগ্লিসারাইড কমানোর ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা রাখে। তবে, সবার আগে আপনাকে ক্যালরি হিসাব করে স্বাস্থ্য সম্মত খাবার খেতে হবে। এর সাথে আপনি যদি সপ্তাহে কমপক্ষে পাঁচ দিন নিয়মিত ন্যুনতম ৩০ মিনিট করে জোরে জোরে হাটতে পারেন, তাহলে ট্রাইগ্লিসারাইড কমানো ঔষধ না খেয়েই এটি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন।
এছাড়াও, নিচে কয়েকটি ট্রাইগ্লিসারাইড কমানোর ব্যায়াম ও খেলাধুলার নাম উল্লেখ করা হলো যা আপনি অনুশীলন করতে পারেন –
- বাস্কেটবল
- বাই সাইকেল চালানো
- জগিং
- সাতার কাটা
- ফুটবল খেলা
- টেনিস খেলা, ইত্যাদি।
উপসংহার
বন্ধুগন, ট্রাইগ্লিসারাইড কেন বাড়ে বা ট্রাইগ্লিসারাইড বেশী হলে কি হয় – বিষয়টির উপর যে সব তথ্য উপস্থাপন করা হলো তার উপর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট এর মাধ্যমে জানানোর অনুরোধ করছি। ভাল থাকবেন ও সুস্থ থাকবেন।
Great writing. Articles that have significant and informative information are a lot more
satisfying.